জাবির জাহিদ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।।
কিশোরগঞ্জের সুবিধাবঞ্চিত অসহায় পথশিশুদের স্বপ্নের ঠিকানা মৌসুমী রিতুর বিদ্যানীড়।নরসুন্দা নদীর পাড়ের এ বিদ্যানিকেতনের আলোচনা এখন সমাজসচেতন মানুষের মুখে মুখে। পিতামাতা, অভিভাবক এবং পৃষ্ঠপোষকতাহীন পথ শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে তাদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে এ অবৈতনিক শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা।
মৌসুমী রিতু নামে একজন সমাজকর্মী এর স্বপ্নদ্রষ্টা। অসাধারণ ভালবাসা আর পরম স্নেহ-মমতার সরস নির্যাস ঢেলে দিয়ে পথশিশুদের মন জয় করে তাদের নিয়ে হাটি হাটি পা পা করে মৌসুমী রিতুর আজকের এ বিদ্যা নীড়ের প্রতিষ্ঠা।আর এ মহতী উদ্যোগ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে পথে তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন অনেক সমাজহিতৈষী লোকজন।কিন্তু বিদ্যানীড়কে স্বপ্নের সমান বড় করতে হলে আর-ও অনেক পথ হাঁটতে হবে। প্রয়োজন হবে সুন্দর পরিবেশ সম্মত অবকাঠামো আর প্রাতিষ্ঠানিক রূপের। এজন্য প্রয়োজন হবে সরকার ও প্রশাসনের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহযোগিতা।
কিশোরগঞ্জের মেয়ে মৌসুমী রিতু।মধ্যবিত্ত পরিবারে তার বেড়ে উঠা। কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামের মেয়ে তিনি। পরিবারের শত বাধা বিপত্তি ও অভাব অনটনের মধ্যেই বড় হতে হয় তাকে। তাকেও পড়াশোনার পাঠ চুকাতে হয়েছে নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।
পড়াশোনার পাশাপাশিই তিনি কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ সংলগ্ন নরসুন্দা লেকপাড়ে সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের স্কুল বিদ্যানীড় গড়ে তুলেন।এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রিতু রোজ এক দল সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের লেখাপড়া শিখান। সুপ্ত প্রতিভা এবং মানসিক বিকাশে নাচ, গানের অনুশীলন করান তাদের। এখানে তিনিই ১৮০ পথশিশু ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুর অভিভাবক।
বিদ্যানীড়ের প্রতিষ্ঠাতা মৌসুমী রিতু বলেন, আমার মূল লক্ষ্য হচ্ছে- লেখাপড়ার মধ্যে ওদের সুপ্ত সাংস্কৃতিক প্রতিভা বিকাশ করার, যাতে সমাজ-সংস্কৃতিতে তাঁরা অবদান রাখতে পারে। ওরা হাসবে, খেলবে, গাইবে, নাচবে-এক আনন্দময় পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করে সাফল্যের সঙ্গে প্রাথমিক স্তর অতিক্রম করবে। উচ্চ স্তরে উন্নীত হবে, মানুষের মতো মানুষ হবে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যানীড়কে একটি পরিপূর্ণ কাঠামোগত বিদ্যালয়ে পরিণত করে এবং রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করতে চাই। যাতে আমার বিদ্যানীড়ের বাচ্চারা আমার এখান থেকে পড়া শেষ করে অন্য স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। এদের সার্টিফিকেট দিতে পারি বিদ্যানীড়ের নামে।
মৌসমী রিতুর এ স্বপ্ন পূরণে এবং সুবিধা বঞ্চিত পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রশাসন ও সরকারের পাশাপাশি সমাজহিতৈষী ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং বিত্তশালী দানবীরগণ এগিয়ে আসবেন-এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।