কাজী ইমরান
নড়াইল প্রতিনিধি।।
নড়াইলে শিশু আরাপ হত্যা মামলায় ‘মা’ মৌসুমি খানমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) তাকে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
গত ২৭ নভেম্বর নড়াইল সদর উপজেলার লস্করপুর গ্রামের মোঃ মিলন মোল্যা ও মোসাঃ মৌসুমী খানম দম্পতির ১ মাস ২৭ দিন বয়সের শিশু সন্তান আরাফ মোল্যার লাশ উদ্ধার হয়। তাদের বসতবাড়ির উত্তর পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে ছোট একটি পুকুরে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নিহতের বাবা মোঃ মিলন মোল্যা বাদী হয়ে গত ২৯ নভেম্বর নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান বলেন, ডিবি পুলিশ শিশুটির ‘মা’ মোসাঃ মৌসুমী খানমকে (২৪) গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
আসামী মোসাঃ মৌসুমী খানমকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
আসামি মৌসুমির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শিশু আরাপ জন্মের পর থেকেই তার শ্বাসনালী ছোট হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতো এবং দুধ খেতে গেলে বুকে দুধ বাঁধতো। মাঝেমাঝে বমিও করে দিতো। বাচ্চাটির অনেক ঠান্ডা জনিত সমস্যাও ছিল। যে কারণে তাকে সবসময় চিকিৎসকের চিকিৎসার মধ্যে রাখা হতো। ঘটনার দিন শিশু আরাপ তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার সময় হঠাৎ তার মুখ হা হয়ে যায়, শিশুটি চোখ বড় বড় করে তাকায় এবং কিছুক্ষণ পর তার শরীর নীল হয়ে যায়। তখন আরাপের ‘মা’ মৌসুমী ভেবেছিল তার বুকে মনে হয় দুধ বাঁধছে। এরপর তিনি তার বাচ্চাকে সোজা করে ঝাকাঝাকি করতে থাকেন। তার মাথায় ফুঁ দেন। কিন্তু শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
পুলিশ আরও জানায়, তখন তিনি শিশুটির পালস্ চেক করে দেখেন যে, শিশুটি মারা গেছে। শিশু আরাপের ‘মা’ মোসাঃ মৌসুমী খানম কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে, তার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের কি বলবে এই ভেবে ভয় পেয়ে যায়। তারপর তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং স্বামীর ভয়ে তার মৃত শিশু সন্তানকে রাতের আঁধারে সকলের অগচরে বাড়ির পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে পুকুরের ভিতর নিজ শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে আসেন। পুলিশ জানায়, এরপর বাড়িতে এসে সবাইকে বলেন যে, তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জীন-পরী শিশুটিকে নিয়ে গেছে বলে গল্প সাজায়।