আজ ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

শরীয়তপু‌রে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে কোষ্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

  • In অনুসন্ধান
  • পোস্ট টাইমঃ ২৫ অক্টোবর ২০২৩ @ ০৩:৩২ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২৫ অক্টোবর ২০২৩@০৩:৩২ অপরাহ্ণ
শরীয়তপু‌রে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে কোষ্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

নয়ন দাস
শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।

সরাদেশে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চলছে। পদ্মা নদীর চাঁদপুর মোহনা থেকে শরীয়তপু‌রের নড়িয়ার সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করছে প্রশাসন। প্রতিদিন ভ্রাম্যমান আদালত নদীতে অভিযান, নদীর পা‌ড়ে, রাস্তায় চেকপোষ্ট সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু কোন ভাবেই জেলেদের নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছেনা। নদীতে জেলেরা ভয়ংকর সন্ত্রাসী আচরণ করছে প্রশাসনের সাথে। সুযোগ পেলেই লাঠিশোঠা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ছে অভিযানে থাকা সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপরে।

জেলেদের অভিযোগ, প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরতে ৫ হাজার টাকা দেই পুলিশকে। এরপরও আমাদের হয়রানি করছে তারা। ধরে নিয়ে জেল জরিমানা করছে।

এদিকে, অভিযানে নৌ পুলিশ ও কোষ্ট গার্ডের সদস্যদের যথাযথ সহযোগীতা পাচ্ছেনা উপজেলা প্রশাসন। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে উপজেলা প্রশাসনের গোপন সুত্রগুলো। নৌ পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে নৌপুলিশের উর্দ্ধতণ কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে বলে দাবী করেছে ওই সুত্র।

২৩ অক্টোবর ভেদরগঞ্জ উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলেদের ভয়ংকর সন্ত্রসী হয়ে ওঠার পেছনে দুইজন ইউপি চেয়ারম্যনের নেপথ্য ইন্ধোনের অভিযোগ র‌য়ে‌ছে। তাদের ছত্রছায় জেলেরা মাছ ধরতে নদীতে নামছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভেদরগঞ্জ উপজেলায়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্যা তার বক্তব্যে বলেছেন, জেলেরা বলছে পুলিশকে টাকা দিয়ে নদীতে নামছে তারা। এই পুলিশ কারা নৌপুলিশ না থানা পুলিশ আমরা তা জানিনা। যদি কেউ এ জাতীয় অপরধের সাথে জড়িয়ে থাকেন- তাদেরকে সর্তক করা হচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

সরেজমিনে পদ্মা নদীতে কথা হয় জসিম, কালা মিয়া, কামাল, লিল চাঁনসহ বেশ কয়েকজন জেলের সাথে। তারা জানায়, আমাদের আরৎদাররা প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরতে পুলিশকে নৌকা প্রতি ৫ হাজার টাকা দেয়। আমি মাছ পাই বা না পাই- আমাকে ওই টাকা পরিশোধ করতে হবে। নৌপুলিশ, কোষ্টগার্ডসহ নদীতে যারা আসে তারা সবাই এই টাকার ভাগ পায়। এরপর আবার কেন আমাদেরকে নির্যাতন করবে? এমনিতেই মাছ পাইনা, তারপর পুলিশ নির্যাতন করছে।

উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের মোল্লা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শতশত নৌকা নদীতে জাল ফেলে অপেক্ষা করছে। প্রকাশ্যে মাছ বেচাকিনা করছে আরৎদাররা। জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের অভয় অরণ্যে পরিনত হয়েছে মোল্যা বাজার।

নরসিংহপুর নৌ পুলিশ ফাঁরির ইনচার্জ মো: নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা জেলেদের নিয়ে কাজ করি। অভিযানে অনেক জেলে আটক হয়েছে। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে জেলেরা টাকা পয়সার অভিযোগ তুলছে। নৌপুলিশের সাথে কোন আরৎদার বা জেলের আর্থিক কোন সর্ম্পক নেই। এসব অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। প্রশাসনকেও আমরা সব ধরনের সহযোগীতা করে আসছি। কেন আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বুঝতে পারছিনা।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার তারাবুনিয়া কোষ্টগার্ড ইনচার্জ এর মোবাইল নাম্বারের বারবার ফোন করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, জেলেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সুযোগ পেলেই আক্রমন করছে। জেলেদের হামলা মোকাবেলা করে আমরা অভিযান সফল করতে জিরোট্রলারেন্স নীতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিন মাছ ধরার সাথে জড়িত জেলেদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করে যাচ্ছি।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মা ইলিশ রক্ষার্থে প্রতিদিন নদীতে অভিযান চলমান রয়েছে। মাঝে মাঝেই জেলেরা আক্রমনাত্বক আচরণ করছে। উত্তর তারাবুনিয়ার মোল্যা বাজারে গতকাল আমি নিজেই অভিযান পরিচানা করেছি। সেখানে শতশত জেলে একত্রিত হয়েছিল তাদেরকে অভিযানের বাকি সময়ে নদীতে না নামতে উৎসাহিত করেছি। তারা ওয়াদা করেছে বাকী সময়ে নদীতে নামবেনা। মোল্যা বাজারে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ বেছাকেনায় জড়িতদের কঠোর হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। জেলেরা পুলিশকে টাকা দিয়ে নদীতে নামে এমন অভিযোগ করেছে আমার কাছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হবে। অভিযান শেষে জেলেদের মাছ ধরতে যেন কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃ‌ষ্টি করতে না পারে সে বিয়ষে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলেদের সমস্য নিয়ে আলোচনা করা হবে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights