আজ ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

বাংলাদেশি আলুর চাহিদা বিদেশে

  • In জাতীয়, ব্যবসা বাণিজ্য
  • পোস্ট টাইমঃ ২১ মার্চ ২০২৩ @ ০৯:২২ পূর্বাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২২ মার্চ ২০২৩@০৬:২৯ পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশি আলুর চাহিদা বিদেশে

বাংলাদেশের কৃষকদের কাছ থেকে এ বছরও আলু সংগ্রহ করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। প্রতি বছরের মতো এবারও এ উপলক্ষে সফল আরেকটি বছর উদযাপন করতে যাচ্ছেন কৃষকরা।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উৎপাদক চারটি প্রতিষ্ঠান রংপুরে বার্ষিক আলু রপ্তানির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে।

২০২২ সালে বাংলাদেশ ১১ মিলিয়ন টন আলু উৎপাদন করেছে। এরমধ্যে ০.৮ মিলিয়ন টন আলু রপ্তানি করা হয়েছে। এশিয়ায় চীন ও ভারতের পর এটিই সবচেয়ে বেশি।

রপ্তানি করা আলুর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি পাঠানো হয়েছে মালয়েশিয়ায়, পঞ্চমাংশ গেছে নেপালে ও পঞ্চমাংশ গেছে শ্রীলঙ্কায়।

এছাড়াও মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রুনাই, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, জর্ডান এবং লেবানন বাংলাদেশ থেকে আলু সংগ্রহ করছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, রাশিয়া, ফিজি ও ভিয়েতনামে রপ্তানি শুরু করতে চাইছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলছে, আলু গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী এক ফসল। লাভজনক হওয়ায় এটি কৃষকের জীবন বদলে দিতে পারে।

গত চার বছর ধরে আলু উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলো এফএও-এর মাধ্যমে রপ্তানির মানসম্মত আলু উৎপাদনের লক্ষে রংপুরের কৃষকদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর চাষাবাদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ নীতির ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

রংপুরে দেশের এক-চতুর্থাংশ আলু উৎপাদিত হয়। রপ্তানি-মানের আলু উৎপাদনে সেরা জেলাগুলোর একটি ছিল ঠাকুরগাঁও সদর।

এ বছর আলু চাষীরা ভালো ফলনের আশা করছেন। তারা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ পটেটো এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিইএ) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে।

বিশেষ করে রপ্তানির জন্য কৃষকরা “সানশাইন” নামে একটি নতুন আলু চাষ করতে শুরু করেছে। এটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং উচ্চ ফলন  দিচ্ছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা বাংলা কৃষক সোসাইটি (এসবিকেএস), কৃষকদের সংগঠনগুলির একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক এবং এফএও এর মিসিং মিডল ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের অধীনে অংশীদারিত্বের কারণে রপ্তানি উদ্যোগে সফলতা এসেছে।

তারা একসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআইআই), এবং বিপিইএ-এর সাথে কাজ করেছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এবং বিএডিসির মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে রপ্তানি বাড়াতে আলু উৎপাদনকারীদের সহায়তা করছে।

বাংলাদেশে এফএও প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন বলেন, আলু উৎপাদন কৃষি রপ্তানি কৌশলের একটি অংশ। তবে মূল্য সংযোজনে বিনিয়োগ করাও গুরুত্বপূর্ণ।

“দেশের কৃষি খাতকে রূপান্তরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির অংশ হিসেবে আলসহ প্রধান ফসলের রপ্তানি বাড়াতে এফএও সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। সঠিক সহায়তায়, বাংলাদেশী আলু উৎপাদনকারীরা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম। এটি অন্যান্য ফসলের জন্য একটি সফল মডেল,” তিনি বলেন,তবে আমাদের অন্যান্য আলুর জাতগুলোকেও বিবেচনা করতে হবে ও প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগ করতে হবে। এটি বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন বজায় রাখবে ও চিপসের মতো আলু-ভিত্তিক পণ্যগুলির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতীয় চাহিদা মেটাবে।

এফএও, সরকার, আলু উৎপাদক সংস্থা এবং কৃষকদের অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে একটি আলু চাষি ও ব্যবসায়িকদের মধ্যে মতবিনিময় করে। এছাড়া আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও গবেষণা সংস্থাও এতে উপস্থিত ছিল।

অনুষ্ঠানে কৃষকরা স্থানীয় ও উন্নত জাতের আলুর প্রদর্শন করেন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার।

ব্যবসায়িক আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সাজ্জাদ, অতিরিক্ত সচিব বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, ডিএই এর মহাপরিচালক মো. আফতাব হোসেন, ডিএইর রংপুরের অতিরিক্ত পরিচালক সালমা রহমান, এগ্রোনমি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন, বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিইএ) সাধারণ সম্পাদক সালমা আক্তার, স্থানীয় আলু চাষী ও ধানতলা আলু উৎপাদক সমবায় সমিতির সদস্যরা।

রপ্তানি সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কৃষক ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা।এমএমআই ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর, ইমানুন নবী খান বলেন, আমরা কৃষকদের রপ্তানিকারকদের সাথে সংযুক্ত করি। এই ম্যাচমেকিং একটি লাভজনক ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি করে। আলু চাষীরা ন্যায্য মূল্য পায় এবং রপ্তানিকারকরা গুণমান পরিদর্শনের সুযোগ পান। খামার থেকে বন্দরে পরিবহন নিশ্চিত করে। এফএও-এর হ্যান্ড-ইন-হ্যান্ড উদ্যোগের উপর ভিত্তি করে এই ব্যবসায়িক মডেল কার্যকর।

রপ্তানি করতে চাওয়া আলু চাষীরা সীমিত কোল্ড স্টোরেজ ক্ষমতা, স্ট্যান্ডার্ড ফাইটো-স্যানিটারি ল্যাবের অনুপস্থিতি, ভাল কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব ও বাজারে প্রবেশের অসুবিধাসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।

বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়ানোর জন্য গত চার বছর ধরে প্রতিটি আলু মৌসুমের আগে এফএও, ডিএই, এবং বিএডিসি, বিপিইএ-এর কর্মকর্তারা ক্ষুদ্র আলু চাষীদের সাথে বৈঠকের জন্য একটি ক্রেতা-বিক্রেতা বৈঠকের আয়োজন করছে।

বিপিইএর কর্মকর্তারা বিদেশী ক্রেতাদের চাহিদা ও কার্যাদেশ পেতে যোগাযোগ করেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় সারাদেশে কৃষকদের সাথে ভালো কৃষি পদ্ধতি শেয়ার করছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলা জিএপি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ। রপ্তানিকারকদের স্যানিটারি ও ফাইটো-স্যানিটারি প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য উন্নত গবেষণাগার স্থাপনের কাজও চলছে।

গ্লোবাল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রামের (জিএএফএসপি) অর্থায়িত এফএও-র এমএমআই প্রকল্প, ডিজিটাল গ্রাম প্রতিষ্ঠা করতে ও উদ্ভাবনী কৃষিব্যবসা পরিষেবা দেয় এমন শক্তিশালী গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও উৎপাদক সংস্থার শীর্ষস্থানীয় এসবিকেএস-এর সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে দারুণ সাফল্য পেয়েছে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights