এম আর মিলন
বিশেষ প্রতিনিধি।।
লালমনিরহাট আলোরূপা মোড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অপরদিকে লালমনিরহাট চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং লালমনিরহাট পৌরসভা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদেরকে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেছেন।
আজ ১৬ জুলাই সরেজমিনে আলোরূপা মোড়ের অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লালমনি জেনারেল স্টোর, আর্ট স্কোপ, স্টার গ্যালারী ও মামুন স্টোরসহ প্রতিটি দোকানেই ছাইয়ের স্তূপ। কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই, প্রতিটি দোকানেই ধ্বংসাবশেষ অপসারনের কাজ করছে। এসময়ে কাজের ব্যস্ততার মাঝেই স্টার গ্যালারীর ম্যানেজার নয়ন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বিডিহেডলাইন্সকে জানান, আমাদের কাঠ ও প্লাইউড এর শো-রুম হওয়ায় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। কি পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে জানতে চাইলে বলেন, প্রায় ৫০ লাখেরও বেশী হবে।
এদিকে আর্ট স্কোপের স্বত্বাধিকারী সাইদুল ইসলামের ছেলের সাথে কথা হলে সে জানায়, উক্ত অগ্নিকান্ডে আমাদের প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে নগদ ৫ লক্ষ টাকা পুড়ে গেছে। আমাদের দোকান ও বাসার কোনোকিছু অবশিষ্ট নেই। আমরা একেবারে পথে বসে গেছি। আমরা সহায়তা পেলে কোনোরকম ডাল-ভাত খেয়ে বেচেঁ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে পারবো।
অপরদিকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লালমনি জেনারেল স্টোর। দোকান মালিক রুহুল আমীন বাদলের স্ত্রী মোছাঃ রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, আমার চোখের সামনেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। ওই সময়ে আমি দোকানের পিছনের বাসায় ছিলাম। আগুন দেখে কি করবো ভাবতে পারছিলাম না। সেমুহুর্তে এলাকার লোকজন আমাকে উদ্ধার করে। তিনি বলেন, আমার স্বামী হজ্বে গেছেন। খুবই বিপদে পড়েগেছিলাম, কিছুই অবশিষ্ট নেই শুধু জীবনটা রক্ষা করতে পেরেছি। ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে বলেন, বাসা, ৪টি দোকান ও গোডাউনসহ প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এবিষয়ে পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার শুরুতেই আমি সেখানে গিয়েছিলাম। খোজঁখবর নিয়েছি, পরবর্তিতে আবার আমি পরিদর্শন করেছি। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাবসায়ীদেরকে সহোযোগিতা করার জন্য আশ্বস্ত করেন।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোড়ল হুমায়ুন কবীরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমাদের ফোরামে আলোচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহোযোগিতা করা হবে। আর এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে তখনও আমরা ব্যবসায়ীদের পাশে ছিলাম। চেম্বার অব কমার্স ব্যবসায়ীবান্ধব সংগঠন। আমরা সর্বদাই ব্যবসায়ীদের পাশে আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ।
অগ্নিকান্ডের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স লালমনিরহাটের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ ওয়াদুদ হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিলো যে, ১৩ জুলাই আলোরূপা মোড়ের অগ্নিকান্ডে প্রাথমিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান প্রায় দেড়কোটি টাকা। কিন্তু এটি চুড়ান্ত নয়, অগ্নিকান্ডের কারণ ও ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানতে ইতিমধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠিত হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে সঠিক বিষয়টি জানানো যাবে।