।।ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক।।
বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে লোভনীয় খাবারগুলোর মধ্যে একটি হলো আইসক্রিম। তা সে স্কুলের গেটের পাশের আইসক্রিম হোক কিংবা দোকানের কাপবন্দী আইসক্রিমই হোক। আর এমন খাবারের জন্য একটি দিবস না থাকলে বড্ড বেমানান লাগে, তাই প্রতিবছর ‘জুলাইয়ের তৃতীয় রোববার জাতীয় আইসক্রিম দিবস’ উদযাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই হিসাবে এ বছরের ১৬ জুলাই আজ আইসক্রিম দিবস।
আইসক্রিম ভক্তরা এই দিবসটির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন। ১৯৮৪ সালে তিনি আইসক্রিমের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের দুগ্ধ শিল্পকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলো। এখনো মার্কিনিরা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিমায়িত খাবারটি খেয়ে থাকে; সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে বছরে ২৩ গ্যালন (সূত্র ন্যাশনাল টুডে)। রোনাল্ড রিগান জুলাইকে “জাতীয় আইসক্রিম মাস” হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। তিনি আইসক্রিমকে ”যুক্তরাষ্ট্রের নব্বই শতাংশেরও বেশি মানুষের খাওয়া একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার” হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
তারপর থেকে এই দিবসটি আর শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় আটকে থাকেনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইসক্রিম ভক্তরা দিবসটি উদযাপন করেন ও উপভোগ করেন। আইসক্রিম দিবসের কথাতো জানা হলো কিন্তু আইসক্রিম কীভাবে এলো? সত্যি কথা বলতে কী! আইসক্রিম তৈরির কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে এমন কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্ভাবক নেই। তবে, আইসক্রিমের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ। কথিত আছে- আইসক্রিম জাতীয় খাবার প্রথম খাওয়া হয়েছিল চীনে। তাও আবার ৬১৮-৯৭ খ্রিস্টাব্দ সময়ের মধ্যে। প্রথম আইসক্রিম ময়দা, মহিষের দুধ এবং কর্পূর থেকে তৈরি করা হয়েছিল। এটি একটি জৈব যৌগ, যা সাধারণত লোশনে ব্যবহৃত হয়। তবে, সেই আইসক্রিম আর এখনকার আইসক্রিম কোনোভাবেই এক নয়। আবার আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট বরফ ও মধু মিশ্রিত আইসক্রিম খেতে ভালোবাসতেন।
তার প্রায় ১ হাজার বছর পর ইতালিতে মার্কো পোলো একটি রেসিপি এনেছিলেন- যা এখন শরবত নামে পরিচিত। অনুমান করা হয়, আমরা এখন যাকে আইসক্রিম হিসেবে জানি তার বিকাশ হয়েছিল এই রেসিপির মাধ্যমে। এটি একসময় ”ক্রিম আইস” নামে পরিচিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে আইসক্রিমের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৭৪৪ সালে মেরিল্যান্ডের গভর্নর উইলিয়াম ব্লেডেনের এক অতিথির চিঠিতে। এরপর ১৭৭৭ সালের ১২ মে নিউইয়র্ক গেজেট যুক্তরাষ্ট্রে আইসক্রিমের প্রথম বিজ্ঞাপন ছাপা হয়। আমেরিকান বিপ্লবের পরে আইসক্রিম যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
আজ যেহেতু আইসক্রিম দিবস তাই তাই দিবসটি উদযাপন করা যেতেই পারে। আজ পছন্দের কোনো আইসক্রিম খাওয়া যেতে পারে, কিংবা প্রিয়জনকে উপহার হিসেবে দিতে পারেন বহু স্বাদের আইসক্রিম। তবে বাংলাদেশে হলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে আজ আইসক্রিম খাওয়া এবং উদযাপন যথাযথ আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে করা হচ্ছে।
