রফিক প্লাবন
দিনাজপুর প্রতিনিধি।।
দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের কর্ণাই বারোয়ারী দূর্গা ও কালী মন্দিরে প্রতিমার গলা থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় বিকাশ চন্দ্র রায় (২১) নামে একজনকে আটক করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। আটক বিকাশ চন্দ্র রায় কর্ণাই গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ রায় ও মেনকা বালার ছেলে।
গতকাল শনিবার (৮ জুলাই) দুপুর আড়াই টায় শহরের গোপালগঞ্জ বাজারের “শিবা জুয়েলার্স” এর দোকান থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে চুরি হওয়া ৮টি স্বর্ণের লকেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ৮টি লকেটের ওজন অনুমান ৮ আনা। যার মূল্য অনুমান ৪৫ হাজার টাকা। আজ রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় সংবাদ সম্মলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মাসুম বিষয়টি জানান।
তিনি আরো জানান, কর্নাই বারোয়ারী দূর্গা ও কালী মন্দিরে প্রতিমার লকেট চুরির ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি ছন্দ রায় (মামলার বাদী) থানায় লিখিতভাবে এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে উল্লেখ করেন যে, গত ২ জুলাই ২০২৩ সন্ধ্যা হতে ৩ জুলাই ২০২৩ সকাল অনুমান ১০ টা এই সময়ের মধ্যে প্রতিমার গলায় থাকা ৮টি সোনার লকেট (পাদুকা) যার ওজন অনুমান ৮ আনা এবং মূল্য অনুমান ৪৫,০০০/-(পয়তাল্লিশ) হাজার টাকা চুরি হয়েছে। বাদী এজাহারে আরো জানান, মন্দিরের কেচি গেইটের তালা লাগানো ছিল।
এজহার প্রাপ্তির পরেই থানায় মামলা রুজু হয় এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ আসাদুজ্জামান পুলিশ সুপার মোঃ শাহ ইফতেখার আহম্মেদ, পিপিএম এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তানভিরুল ইসলাম, মোঃ গোলাম মাওলা শাহ (ইন্সপেক্টর তদন্ত) সহ কোতয়ালী থানার একটি চৌকশ টিম অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে মাঠে কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার (৮ জুলাই) দুপুর আড়াই টায় শহরের গোপালগঞ্জ বাজারের “শিবা জুয়েলার্স” এর দোকান থেকে বিকাশ চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, আসামীকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামী গত ২ জুলাই ২০২৩ দুপুর অনুমান ১ টার সময় মন্দিরের কেচি গেইট হতে বাশের লম্বা লাঠির মাধ্যমে মন্দিরের ভেতরের কালী প্রতিমার গলায় থাকায় সোনার লকেট টান দিলে ৩ টি লকেট মাটিতে পড়ে যায়। সেগুলো তুলে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে ওই দিনই দুপুর অনুমান আড়াই টায় গোপালগঞ্জ বাজারে শিবা জুয়েলারী দোকানে স্বর্ণের লকেট ৩টি ৩ হাজার টাকায় বিক্রির জন্য দাম ঠিক করে। দোকানের মালিক বিকাশ চন্দ্র ১ হাজার ৫শ টাকা দিয়ে অবশিষ্ট ১ হাজার ৫শ টাকা শনিবার (৮ জুলাই) দুপুরে দিবেন বলে জানান। লকেট তিনটি নিয়ে দোকানদারের সন্দেহ হলে তিনি পুলিশে খবর দেন। এরপর কোতয়ালী থানার টিম শনিবার (৮ জুলাই) গোপালগঞ্জ বাজারে শিবা জুয়েলারী দোকানের পার্শ্বে গোপনে অবস্থান করে। ওই দিন অনুমান সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আসামী বাকী টাকা নিতে দোকানে আসলে দোকানদার পুলিশকে ইসারা করলে কোতয়ালী থানা টিম তাকে আটক করে। পরে দোকানদার লকেট ৩টি বের করে দিলে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আসামী চুরির ঘটনা স্বীকার করে। এসময় অবশিষ্ট আরো ৫টি লকেটের কথা জিজ্ঞাসা করলে আসামী জানায়, হয়তো মন্দিরের আশেপাশে ছিটকে পরেছে। পুলিশ তার দেওয়া তথ্য মতে তাকে নিয়ে মন্দিরে উপস্থিত হয়ে মন্দির কমিটির উপস্থিতিতে মন্দির তল্লাশী করলে কালী প্রতিমার চুলে আটকানো অবস্থায় ৫টি লকেট পাওয়া যায়। পরে লকেট ও ধৃত আসামীসহ থানায় হাজির করা হয়।
তিনি জানান, আসামীকে আজ রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে আদালতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি নিছক চুরির ঘটনা, এর সাথে সাম্প্রাদিয়ক সম্পর্ক বিনষ্টের কোন অভিপ্রায় নেই।