রফিক প্লাবন
দিনাজপুর।।
এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে পবিত্র ঈদ উল আযহার বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার একসঙ্গে প্রায় দুই লাখ মুসল্লি ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন বলে জানান আয়োজকরা।
নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এ জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা। ঈদের জামাতে মুসল্লীদের অংশগ্রহনের সুবিধার্থে এবারই প্রথম এই দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
মেঘ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল ৭টা থেকে মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন এ ঈদগাহে। ঠিক সাড়ে ৮টায় শুরু হয় নামাজ। ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল আলম কাশেমী। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে করা হয় বিশেষ মোনাজাত।
বৃহৎ এ জামাতে অংশ নেন- বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম জানান, সাধারণত ঈদুল আজহায় মুসল্লি কম হয়ে থাকে। কিন্তু এবার পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর এবং পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুর বিশেষ ট্রেন থাকায় মুসল্লি কমেনি। বৈরি আবহাওয়ায়ও দুই লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন এ জামাতে।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, এবার ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় হওয়ায় দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। নামাজ আদায় করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেন তারা। বিশেষ ট্রেনে নামাজ আদায় করতে এসেছিলেন ঠাকুরগাঁও থেকে আবুল কালাম আজাদ (৬৫)। তিনি জানান, এ জামাতের কথা আগে শুনেছি। এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি। এতো মুসল্লির সঙ্গে নিয়ে প্রথমবার ঈদের নামাজ আদায় করলাম।
দিনাজপুর স্টেশন সুপার একেএম জিয়াউর রহমান জানান, পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর এবং পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুর বিশেষ ট্রেনগুলো সকাল সোয়া ৭টায় এবং পৌনে ৮টায় দিনাজপুর স্টেশনে এসে পৌঁছায়। সকাল সাড়ে ৯টায় পুনরায় গন্তব্যে ছেড়ে যায়।
বৃহৎ এ জামাতে অংশ নেয়া মুসল্লিদের জন্য স্থাপন করা হয় শৌচাগার, ওজুর ব্যবস্থা। বসানো হয় মেডিকেল টিম। পুলিশ, বিজিবি, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খ র্যাবসহ বিভিন্ন রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নেয়া হয়। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সুষ্ঠুভাবে নামাজ সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।
এশিয়ার বৃহত্তম ঈদগাহ মিনারটি ২২ একর আয়তন বিশিষ্ট। এই ঈদগাহে ১৯৪৭ সাল থেকে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও আধুনিক নির্মাণশৈলীতে এই ঈদগাহে বৃহৎ পরিসরে ঈদের জামাত শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। কিন্তু মাঝখানে করোনা পরিস্থিতির জন্য দু’বছর এ ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি ঈদের জামাত।