আজ ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

এখনো বেতন-বোনাস হয়নি অনেক পোশাক কারখানায়

এখনো বেতন-বোনাস হয়নি অনেক পোশাক কারখানায়

।।নিজস্ব প্রতিবেদক।।

গত ৬ জুন রাজধানীর বিজয়নগর শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ-টিসিসি এর ৭৫ তম এবং আরএমজি টিসিসির ১৫ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শিল্প মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ঈদের ছুটির আগে শ্রমিকদের বোনাস এবং জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দিতে হবে। অথচ গতকাল অধিকাংশ শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও এই ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি কারখানায় মে মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসও দেওয়া হয়নি। তবে বিজিএমইএ’র নেতারা বলছেন, প্রায় ৯৯ ভাগ গার্মেন্টস কারখানায় মে মাসের বেতন, ৯০ ভাগ কারখানায় ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। বাকি যেগুলো আছে আজ মঙ্গলবার সেগুলোতে পরিশোধ করা হবে।

এখনো বেশ কিছু কারখানায় বেতন-বোনাস না হওয়ায় অনেক শ্রমিককেই ঈদ কাটাতে হবে কষ্ট করে। অথচ ৬ জুনের বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেশ শক্ত করেই বলেছিলেন, ঈদ যেহেতু মাসের শেষ দিকে সেজন্য মালিকগণ মে মাসের বেতন তো দিবেনই, পাশপাশি ঈদ বোনাসের সাথে চলতি জুন মাসের ১৫ দিনের বেতনটাও পরিশোধ করবেন। শ্রমিক নেতৃবৃন্দের জুন মাসের পূর্ণ বেতন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেছিলেন, ১৫ দিনের বেতন বাধ্যতামূলক। তবে কোন মালিকের সক্ষমতা থাকলে পূর্ণ মাসের বেতন দিতে পারবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত অধিকাংশ গার্মেন্টস কারখানায় মে মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়া হলেও চলতি জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন নিয়ে সংকট রয়েছে এখনো। গতকাল পর্যন্ত ৫০ ভাগ কারখানায় ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হয়নি। গাজিপুরের ডার্ক নিট কম্পোজিট কারখানা এবং সালাহউদ্দিন স্পিনিং মিলে এখনো বেতন-বোনাস কিছুই দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে ডার্ক নিট কম্পোজিটে রয়েছে ২ হাজার ৫০০ শ্রমিক এবং সালাহউদ্দিন স্পিনিং মিলে রয়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার শ্রমিক। গতকাল পর্যন্ত এই সাত হাজারের অধিক শ্রমিক বেতন-বোনাস না পাওয়ায় এবার ঈদটা তাদের কাছে নিরানন্দের হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতারা।

এসব তথ্য জানিয়ে শ্রমিক নেতা ও জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি সময়ের আলোকে বলেন, ‘সোমবার পর্যন্ত এই দুই কারখানায় বেতন-বোনাস হয়নি। মালিক পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা আশাই আছি, মঙ্গলবার (আজ) হয়তো একটা সমাধান হবে। আমরা চাই একজন শ্রমিককেও যেন বেতন-বোনাস ছাড়া ঘরে না যেতে হয় আমরা সেটিই চাই। তাই মালিকদের বলবো তাদের বেতন-বোনাস দেবার জন্য।

এদিকে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম সময়ের আলোকে বলেন, ‘বেতন-বোনাস নিয়ে এবার তেমন কোনো সংকট নেই। ৯৯ ভাগ কারখানায় মে মাসের বেতন হয়ে গেছে। বোনাস হয়েছে ৯০ ভাগ কারখানায়। বাকিগুলো মঙ্গলবারের মধ্যেই হয়ে যাবে। তবে চলতি জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন সব শিল্প মালিক দিতে পারছেন না। হয়তো ৫০ ভাগ কারখানা মালিক দিতে পারছেন। অন্যরা পারছেন না, কারণ এখন ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। সবার সময় খারাপ যাচ্ছে। পণ্য রফতানি করে অনেকে পেমেন্ট পাননি। তাই যাদের সামর্থ্য আছে তারা দিচ্ছে, যাদের নাই তারা দিতে পারছেন না। ঈদের পরে দেবে।

এদিকে দেশের সব খাতের শিল্প কারখানা মিলে এখনো দেশের ৪ হাজার ৫৯৩টি কারখানায় বোনাস দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। জানা গেছে, জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন হয়নি এখনও ৮ হাজার ৯৩১টি কারখানায়। মে মাসের বেতন বাকি আছে ৩০৩টি কারখানায়।
বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বেপজা,পাটকল ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্র জানা গেছে, রোববার বিকেল পর্যন্ত দেশের ৯ হাজার ৯১৫টি কল-কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে ৫ হাজার ৩২২টি কল-কারখানায়। এখনও ৪৫৯৩টি কারখানা তাদের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি।
জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন হয়নি ৮ হাজার ৯৩১টি কল-কারখানায়। অর্থাৎ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে মাত্র ৯৮৪টি কারখানা। মে মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে ৯ হাজার ৬১২টি কারখানায়, এখন বেতন বাকি ৩০৩টি কারখানায়।

এদিকে অন্যান্য ঈদের মতো এবারও ছোট ও সাব কন্ডাক্টে কাজ করা কারখানার বেতন-বোনাস নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এসব কারখানার বেতন-বোনাস অধিকাংশগুলোয় বাকি রয়েছে। অনেক কারখানা আবার নিজ উদ্যোগে বেতন-বোনাস পরিশোধ করছে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights