আজ ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

জলবায়ু পরিবর্তনে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা

  • In শীর্ষ
  • পোস্ট টাইমঃ ২৫ জুন ২০২৩ @ ১১:৪২ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২৫ জুন ২০২৩@১১:৪৯ অপরাহ্ণ
জলবায়ু পরিবর্তনে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা

।।নিজেস্ব প্রতিবেদক।।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে মশার একাধিক বিপজ্জনক প্রজাতির বংশ বিস্তারের গতি আরও ত্বরান্বিত হতে পারে। এতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ আরও ব্যাপক হারে বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (ইসিডিসি)। মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি’র এক প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

সেই ১৯৯৫ সাল থেকে জাতিসংঘ প্রতি বছর জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজন করে যাচ্ছে। সেই সময় থেকে কার্বন নিঃসরণের লাগাম টানতে বিশ্বের জাতিরাষ্ট্রগুলো এবারের আগ পর্যন্ত ২৬টি সম্মেলনের আয়োজন করেছে। তাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে লাগাম তো টানা যায়ইনি, উল্টো বেড়েছে কার্বন নিঃসরণের হার। জলবায়ু সম্মেলনগুলোর মধ্যে সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণটি সম্ভবত প্যারিস সম্মেলন। ২০১৬ সালে ফ্রান্সের জলবায়ু সম্মেলনে হওয়া চুক্তিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্পযুগ-পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় ২ ডিগ্রি কিংবা পারলে ১.৫ এর মধ্যে সীমিত রাখার ব্যাপারে সমঝোতা হয়। ৫ বছরের মাথায় ২০২১ সালের আগস্টে ২৬তম গ্লাসগো সম্মেলনের আগে মানবতার জন্য ‌‌‌‘লাল সংকেত’ প্রকাশ করে জাতিসংঘ। এর ফলস্বরুপ তীব্র তাপদাহ, অতিবৃষ্টি, দাবানল কিংবা বন্যার মতো আবহাওয়ার চার রূপ দেখতে হচ্ছে বিশ্বকে।

ইসিডিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ও প্রলম্বিত গ্রীষ্মকাল এবং ঝড়-বৃষ্টি-বন্যার কারণে এডিস অ্যালবোপিকটাস, এডিস এজিপ্টি প্রজাতির মশার বিস্তারের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। যদি আবহাওয়ার এই অবস্থা সামনের দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকে সেক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, পীতজ্বর, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের বিস্তার বাড়বে। ২০১৩ সালে ইউরোপের আটটি দেশের ১১৪টি অঞ্চলে প্রথম এডিস মশার এই দুই প্রজাতি শনাক্ত হয়। আর চলতি বছরে ১৩টি দেশের ৩৩৭টি এলাকায় প্রজাতি দুটি শনাক্ত হয়।

ইসিডিসির পরিচালক আন্দ্রেয়া অ্যামন বলেন, যদি এডিস মশার এই দুই প্রজাতির বিস্তার অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে সামনের দিনগুলোতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও পীতজ্বরে আক্রান্ত রোগী এবং এসব রোগে মৃত্যু বাড়বে। তিনি আরও আশঙ্কা জানান, আমাদের এখনই উচিত মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। পানি জমতে না দেওয়া, পরিবেশবান্ধব কীটনাশক ব্যবহার করা, ঘুমানোর সময় মশারির ব্যবহার, শরীরের অধিকাংশ অংশ ঢেকে রাখে ও মশা নিরোধক মলম বা ক্রিম ব্যবহার করা। পাশাপাশি এসব বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে অন্তত ২০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার প্রভাবে। এই সময়কালে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলারের সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতিও হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১১ হাজার ৭৭৮টি আবহাওয়া-সম্পর্কিত বিপর্যয় ঘটেছে। এসব ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে বিশে^র অরক্ষিত দরিদ্র্য জনগোষ্ঠী। ডব্লিউএমওর প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫১ বছরে মোট ১১ হাজার ৭৭৮টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ শনাক্ত করা হয়েছে। ভয়াবহ আশঙ্কার বিষয় হলো, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দুর্যোগও বাড়ছে।

ডব্লিউএমও-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত ৫০ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মৃতের হার সবচেয়ে বেশি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। মোট মৃত্যুর ৯০ শতাংশই এই ধারার দেশগুলোতে ঘটেছে। এ ব্যাপারে ডব্লিউএমও-এর প্রধান পেটেরি তালাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সবচেয়ে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীগুলোই চরম আবহাওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হয়েছে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights