।।আদালত প্রতিবেদক।।
৫৮২কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) আদালতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। শুনানিতে বিসিআইসি’র উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন- ‘দুর্নীতিবাজদের টলারেট করা হবে না। দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে সরাসরি জেলে পাঠিয়ে দেব।
বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন।
হাইকোর্ট আরও বলেন- টাকা কি বাতাসে খেয়েছে? কারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এ টাকা আত্মসাৎ করেছে- সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম জমা দিন। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিসিআইসিকে ৯জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এর আগে বিসিআইসির পক্ষে আদালতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়ে আবেদন করা হয়।
আদালতে বিসিআইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান।
গত ৪জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে “৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আসলে দুদকের আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান। এরপর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।
আদেশে ৫৮২কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বিসিআইসিকে ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি ৬০দিনের মধ্যে দুদককে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। রুলে সার আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
পরে এপ্রিলে অপর এক আদেশ বিসিআইসিকে সার আত্মসাতের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি হাইকোর্টে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়- মেসার্স পোটন ট্রেডার্স বন্দর থেকে খালাসের পর গোডাউনে না নিয়ে সরকারের আমদানিকৃত ৭২হাজার মেট্রিক টন সার আত্মসাৎ করে। এতে সরকারের ৫৮২কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী- মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের মালিক সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান (পোটন)। তিনি বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনেরও সভাপতি।