আজ ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিতে কাজ করবে নৌ পুলিশ

  • In সারাবাংলা
  • পোস্ট টাইমঃ ১৫ জুন ২০২৩ @ ০৫:১০ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ১৫ জুন ২০২৩@০৫:১০ অপরাহ্ণ
নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিতে কাজ করবে নৌ পুলিশ

।।নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা আষাঢ় মাসে, এই মাসে ঝড়-বৃষ্টি বেশি হয় বলে ঈদ যাত্রা থেকে শুরু করে নৌপথে কোরবানির পশু নিয়ে আসতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে নৌ পুলিশ। তারা ঈদযাত্রাকে নিরাপদ করতে ঘাট ও পশুর হাট হকারমুক্ত রাখতে কাজ করার কথা জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে গুলশানের পুলিশ প্লাজা কনকর্ডের নৌ পুলিশ কনফারেন্স রুম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অনুরোধ সংশ্লিষ্টদের প্রতি জানান নৌ-পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো.শফিকুল ইসলাম। আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে নৌপথের আইন শৃংখলা ও নৌ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অতিরিক্ত আইজিপি মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকার বাহির থেকে লাখ লাখ কোরবানির পশু নৌপথে ঢাকায় আসবে। এসব পশু যেন কোনো ধরনের বাধা ছাড়া এসব পশু ব্যবসায়ীরা ঢাকায় নিয়ে আসতে পারেন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব। এছাড়া পশু যেন হাটে বিক্রি করে নিরাপদে ব্যবসায়ী নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারেন সেই লক্ষ্যেও আমরা কাজ করব। এছাড়া কোরবানি পরবর্তী পশুর চামড়াও যেন নিরাপদে সড়কে পথে নিয়ে যাওয়া যায় সেই লক্ষ্যেও আমরা কাজ করব।

আসন্ন ঈদে যেন নৌ-দুর্ঘটনা না ঘটে সেই লক্ষ্যে নৌ-পুলিশ কাজ করবে বলে জানিয়েছেন নৌ-পুলিশের প্রধান বলেন, গত বারের ঈদটি কোনো ধরনের বড় দুর্ঘটনা ছাড়ে কেটেছে। এবারও সমন্বিতভাবে কাজ করব যাতে করে কোনো ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা না ঘটে। যেহেতু এই ঈদটি অনুষ্ঠিত হবে আষাঢ় মাসে, সেহেতু এই মাসে ঝড় ও বৃষ্টি বেশি হয়ে থাকে। তাই এবার অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করবে হবে আমাদের সবাইকে। আবহাওয়া যখন খারাপ থাকবে তখন নৌযান চালানো যাবে না। যাত্রীবাহী হোক কিংবা পশুবাহী হোক আবহাওয়ার অবস্থা জেনেই যেন আমরা নৌ-পথে নৌযান নিয়ে রওনা হই। সারা দেশে আমাদের ১৪২ টি ইউনিট আছে আবহাওয়ার অবস্থা জানা থেকে শুরু করে ঈদ যাত্রার নৌযান ও পশুবাহী নৌনযানকে আমরা সাহায্য করতে পারব। এছাড়া জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ যোগাযোগ করেও সাহায্য নেওয়া যাব।

ঈদের মধ্যে লাখ লাখ যাত্রী নৌ-পথে যাতায়াত করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালের চৌঘাট দিয় ঈদ যাত্রায় লাখ লাখ যাত্রী যাতায়াত করবেন নৌ-পথে। লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের বলব সবাই যেন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌ-পথে ঈদ যাত্রা শুরু না করেন। এছাড়া ফিটনেসবিহীন লঞ্চ নিয়ে যেন ঈদ যাত্রা কোনো মালিক না করেন এবং প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই লঞ্চে মাল ও যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। মালবাহী ও যাত্রীবাহী লঞ্চ আলাদা। এছাড়া লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে আমরা ব্যবস্থা নিব।

অন্যদিকে কোরবানির পশু পরিবহনের ক্ষেত্রেও নিরাপদ নৌযান ব্যবহার করতে হবে না। কোনোভাবেই যেন অনিরাপদ নৌযান দিয়ে কোরবানির পশু পরিবহন না করা হয়। এসব বিষয় তদারকি করতে প্রতিটি ঘাটেই আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক নৌ-পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।

বালুবাহী বাল্কহেডের বিষয়ে নৌ-পুলিশ প্রধান বলেন, নৌ দুর্ঘটনার অধিকাংশ ঘটে বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে। ঈদের কয়েক দিন আগে ও পরে বাল্কডে চলাচল সম্পূর্ণ রুপে বন্ধ রাখতে হবে, এটি সরকারি নির্দেশ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এই সময়ে কোনোভাবেই বাল্কহেড চালানো যাবে না। এছাড়া মনে রাখতে হবে সারা বছরই কোনোভাবে রাতের বেলায় বাল্কহেড চালানো যাবে না৷

নৌ-পথে পশুবাহী নৌযান যেন ডাকাতির শিকার না হয় সেই লক্ষ্যে নৌ-পুলিশ কাজ করে যাবে বলে জানিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বড় হাটে নৌ-পথে পশু পরিবহন করে নিয়ে আসা হবে। নৌপথে যেন এসব পশুবাহী নৌযান ডাকাতির শিকার না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। নৌপথে ডাকাতি বন্ধে ও আইনি প্রক্রিয়া গ্রহনের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। আমাদের ২০০ হর্সপাওয়ারের স্প্রিটিবোট রয়েছে, তাই নৌপথে ডাকাতদের ধরতে আমরা সক্ষম। আর কোরবানি পশুর বিক্রির টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করছি ব্যবসায়ীদের। তার পরেও যদি কোনো ব্যবসায়ী নগদ টাকা নিয়ে যেতে চান তারা আমাদের সহায়তা চেলে আমরা সাহায্য করব।

ঘাট ও পশুর হাট হকারমুক্ত রাখতে নৌপুলিশ কাজ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব হকাররা বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় ওষুধ মিশিয়ে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব নিয়ে যাচ্ছে। এসব জায়গায় আমরা চেষ্টা করব নৌ-পুলিশ রাখার এবং হকারমুক্ত রাখার।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নৌ পুলিশ প্রধান বলেন, নদীর পাড়ে আশেপাশে যে গরুর হাট গুলো বসবে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটা ছোট হোক বড় হোক। যেখানে মনে হবে নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন সেখানে আমাদের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। অব্যবস্থাপনা চাদাবাজি ঠেকাতে আমাদের বিভিন্ন টিম কাজ করবে, সিভিলে থাকবে, পেট্রোল টিম থাকবে এবং জেলা পুলিশের সঙ্গে মিলে কাজ করবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কতজন পুলিশ কাজ করবে সেটা বিষয় নয়। প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়বে কমবে, সেখানে নিরাপত্তার জোরদার করার প্রয়োজন আমাদের সর্বোচ্চ নজর থাকবে। ঈদে যারা নৌপথে বাড়ি ফিরবেন কিছু ঘাটে ঈদের তিন চারদিন আগে প্রচন্ড ভিড় থাকবে সেগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি নদী অঞ্চলের প্রতিটি জায়গায় আমাদের ফোর্স কাজ করবে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights