।।নিজস্ব প্রতিবেদক।।
নোয়াখালীতে দিনে দুপুরে মা মেয়ে খুন হওয়ার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পরকীয়ার জের ধরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল ইসলাম। বুধবার (১৪জুন) সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দিয়েছেন পুলিশ সুপার মোঃ শহীদুল ইসলাম।
আটক ওমানপ্রবাসী আলতাফ হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরেহের আব্দুল মুনাফের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে আলতাফ হোসেন।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বুধবার (১৪জুন) সন্ধ্যা ৬টায় সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, রং নম্বরে কলের সূত্র ধরে ৪ মাস আগে ওমানপ্রবাসী আলতাফ হোসেনের(২৮) সঙ্গে নূর নাহার বেগমের(৪০) পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে প্রবাসী আলতাফকে দেশে এসে ব্যবসা করতে বলেন নূর নাহার। ব্যবসার জন্য মূলধন হিসেবে আড়াই লাখ টাকা দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তার আশ্বাসে ওমানের ভিসা বাতিল করে গত ৮জুন পরিবারের সবার অজান্তে দেশে ফিরে আসেন আলতাফ।
আলতাফ পুলিশকে জানায়, দেশে এসে টাকার জন্য নূর নাহারের বাসায় ৪-৫ বার দেখা করে তাকে টাকা দিতে বললে তিনি কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নূর নাহারের ক্ষতি করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকেন আলতাফ। পুনরায় টাকা চাওয়ার জন্য আজ (১৪ জুন) নূর নাহারের বাসায় গেলে আজও টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে নেয়া নতুন একটি ছোরা দিয়ে নূর নাহারকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন আলতাফ।
এসময় নূর নাহার বেগমের মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী(১৭) মায়ের চিৎকার শুনে তাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এলে আলতাফ হোসেন তাকেও ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে আহত প্রিয়ন্তী দৌঁড়ে নিচে নেমে এলে তার পেছনে আলতাফ হোসেনও দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
স্থানীয়রা প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আর নূর নাহার বেগম ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এদিকে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলতাফ খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছে।