আজ ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় ধানের বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, হাটে ১৩শ আর গ্রামে ১২শ

  • In সারাবাংলা
  • পোস্ট টাইমঃ ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ @ ০৭:২৮ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ৭ ডিসেম্বর ২০২৩@০৭:২৮ অপরাহ্ণ
বগুড়ায় ধানের বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, হাটে ১৩শ আর গ্রামে ১২শ

।।বগুড়া প্রতিনিধি।।

কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ৩০টাকা কেজি দরে ৭৪৫ মেট্রিকটন ধান কিনবে সরকার। এদিকে ধানের হাটে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। তারা ধানের দাম বাড়াতে দিচ্ছে না। আড়তদার, চাতাল ব্যবসায়ী, চালকল ব্যবসায়ী ও মাঠপর্যায়ের ধান ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দরপতন ঘটাচ্ছেন বলে কৃষকদের অভিযোগ। তারা ধানের দাম কম পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

আমন মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকার মাঠে ১৯ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে ১৯ জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার সবগুলো মাঠের ধান কাটা-মাড়াই শেষ পর্যায়ে। কিছু মাঠে ধানের ফলন কম হওয়ায় লোকসানের কবলে পড়েছেন চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কয়েকটি গ্রামের মাঠে প্রতিবিঘা জমিতে ফলন হয়েছে মাত্র ৭মণ থেকে ১০মণ। উৎপাদন খরচ তুলতে ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কায় কৃষকদের কপালে যেন দুশ্চিন্তার ভাঁজ। তারা ধান উৎপাদন করে ঋণ পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন। গতবছর মিনিকেট ১৬শ টাকা মণ এবং কাটারিভোগ ১৪শ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও এ বছর বাজারে ধানের দরপতন হয়েছে। উপজেলার রণবাঘা হাটে মিনিকেট ১৩শ টাকা থেকে ১৪শ টাকা মণ, কাটারিভোগ ১৩শ টাকা মণ এবং গ্রাম পর্যায়ের বাজারে কাটারিভোগ ১২শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

মায়ামনি অটোরাইস মিলের ম্যানেজার সোহেল বিশ্বাস জানান, তিনি রণবাঘা হাট থেকে বিভিন্ন জাতের ধান ক্রয় করেছেন। গতবছর মিনিকেট ১৬শ টাকা মণ এবং কাটারিভোগ ১৪শ টাকা মণ দরে ক্রয় করেছিলেন। বর্তমান বাজারে ধানের দাম কিছুটা কম। গেল সোমবার হাটে কাটারিভোগ ১৩শ টাকা মণ, মিনিকেট ১৩শ টাকা থেকে ১৪শ টাকা, ব্রি-৪৯ প্রতিমণ ১১শ টাকা, ব্রি-৯০ জাতের ১২শ ৫০টাকা থেকে ১৩শ টাকা, বিনা-৭ জাতের ১১শ ৫০টাকা, বিনা-১৭ জাতের ১১শ ২০টাকা, ব্রি-৫১ জাতের একহাজার টাকা, ব্রি-৭৫ জাতের ১১শ ৫০টাকা এবং হাইব্রিড জাতের ধান একহাজার ৫০টাকা মণ দরে ক্রয়-বিক্রয় হয়। তবে ব্রি ধান ৩৪ সর্বোচ্চ বাজারমূল্য ১৮শ থেকে দুই হাজার টাকা মণ।

অন্যদিকে গ্রাম পর্যায়ে হাটে ধানের দাম কমেছে জানিয়ে থালতা-মাঝগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক শামীম হোসেন জানান, কাটারিভোগ ১২শ টাকা এবং ব্রি-৯০ প্রতিমণ ১১শ ৫০টাকা থেকে ১১শ ৮০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চককয়া মাঠে স্বর্ণা ও রনজিত জাতের ধান চাষ হয়েছে। এবছর ফলন কম, হাটে স্বর্ণা ধান একহাজার ৫০টাকা থেকে ৬০টাকা মণ দরে বিক্রয় করেছেন।

উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের কৈগাড়ী গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম ও পৌরসভার দামগাড়া মহল্লার এরফান আলী বলেন, এবছর কাটারিভোগ ধানের ফলন হয়েছে ১৩মণ থেকে ১৫মণ। গতবছর প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছিল ২০মণ থেকে ২২মণ। গত অক্টোবর মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৈগাড়ীসহ বেশকয়েকটি গ্রামের মাঠের ফসলি জমিগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় ধানের ফলনে বিপর্যয় হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৭মণ থেকে ১০মণ পর্যন্ত ধান পেয়েছেন কৃষকেরা।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. গাজীউল হক জানান, কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সক্রিয়ভাবে পরামর্শ প্রদান করেছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিছু মাঠে ফলন কম হতে পারে। তবে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights