বিডিহেডলাইন্স ডেস্ক :
আম কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে এক শিশুকে অপহরণ করা হয়েছিল রোজার ঈদের পর। এরপর সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে দত্তক দেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে ওই শিশুকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয় এক দম্পতির কাছে।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন খান জানান, গত বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াসি গ্রাম থেকে তিনবছর বসয়ী ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ৫জন হলেন- পীযূষ কান্তি পাল(২৯), তার স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল(২৫), শিশু বিক্রির দালাল সুজন সুতার(৩২), শিশু ক্রেতা পল্লব কান্তি বিশ্বাস(৫২) ও তার স্ত্রী বেবি সরকার(৪৬)।
পীযূষ ও তার স্ত্রী থাকেন সাভারে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাশ করা পিযূষ সাভারের একটি ‘স্পা’ সেন্টারে কাজ করেন। পীযূষের বিরুদ্ধে এর আগেও মানব পাচারের মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। আর সুজন সুতার, পল্লব কান্তি বিশ্বাস(৫২) ও তার স্ত্রী বেবি সরকারের(৪৬) বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় তাড়াসি গ্রামে। আত্মীয় সুজনের মাধ্যমেই নিঃসন্তান দম্পতি পল্লব ও বেবি শিশুটিকে কিনে নিয়েছিল পীযূষদের কাছ থেকে।
শুক্রবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে র যব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসে অপহরণ ও বিক্রির ঘটনা এবং শিশু উদ্ধারের বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-২ এর অধিনায়ক মোঃ আনোয়ার হোসেন খান। তিনি বলেন, ২৬এপ্রিলে দুপুরে বড় বোন এবং আরও কয়েকটি শিশুর সঙ্গে বাড়ির কাছে ঢাকা উদ্যানে খেলছিল তিন বছরের শিশুটি। ওই সময় পীযূষ তাকে আম কিনে দেওয়ার কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে যায় আর বাকিদের চকলেট দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
শিশুটির বড় বোন বাসায় গিয়ে ঘটনা জানালে তাদের বাবা মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে র্যাব অপরহরণকারীদের শনাক্ত করে বলে জানান আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পারি, অপহরণকারী হলেন পীযূষ কান্তি পাল ও তার স্ত্রী সহযোগী রিদ্ধিতা পাল। তারা দত্তক দেওয়ার কথা বলে ফেইসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে। ওই পোস্টে তারা লেখেন, তাদের বাসায় স্বামী পরিত্যক্তা এক গৃহকর্মী আছেন, যার একটি সন্তান আছে। ওই শিশুকে তারা দত্তক দিতে চান।
এরপর পীযূষ ও রিদ্ধিতা দালাল সুজন সুতারের মাধ্যমে পল্লব কান্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং দুই পক্ষ সমোঝোতায় পৌঁছালে নিঃসন্তান পল্লব ও তার স্ত্রীর কাছে অপহৃত শিশুটিকে ২লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রথমে সুজন সুতারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর জিজ্ঞাসাবাদে তার থেকে তথ্যে অনুসারে সাভার ও গোপালগঞ্জে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।