আজ ২রা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২৫শে জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ফরিদপুরে ভাতিজির সাথে চাচার প্রেম, অতঃপর বিয়ে!

  • In সারাবাংলা
  • পোস্ট টাইমঃ ২ অক্টোবর ২০২৩ @ ০১:০৫ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২ অক্টোবর ২০২৩@০১:০৫ অপরাহ্ণ
ফরিদপুরে ভাতিজির সাথে চাচার প্রেম, অতঃপর বিয়ে!

হারুন-অর-রশীদ
ফরিদপুর প্রতিনিধি।।

ফরিদপুরের সদরপুরে অর্ধবয়সি এক কলেজছাত্রী ভাতিজিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পালিয়ে বিয়ে করেছে দুই সন্তানের জনক চাচা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হলে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত চাচাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুঁপিয়ে গুরুত্বর জখম করেছে ভাতিজারা। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছেন।

সোমবার (০২ অক্টোবর) সকালে ওই এলাকায় গিয়ে কথা হয় একাধিক স্থানীয় ব্যক্তির সাথে। তারা জানায়, ওবায়দুর ও স্বর্ণা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজি। ওবায়দুরের বাবা এবং স্বর্ণার দাদা আপন ভাই। তাদের এমন সম্পর্ক হবে কেউ কখনো ধারণাও করতে পারেনি। এটা সমাজে ঘৃণিত কাজ এবং সমাজ কখনো মেনে নিবে না।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কাজীরডাঙ্গী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত চাচা কাজী ওবায়দুর রহমান (৪০) ওই গ্রামের মৃত ইমদাদ কাজীর ছোট ছেলে এবং তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।

জানা যায়, গত ৪ বছর যাবৎ ভাতিজি স্বর্ণার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন চাচা ওবায়দুর কাজী। অনার্সে পড়ার সুবাদে গত দুই বছর আগে ফরিদপুর শহরের একটি মেসে থাকতে শুরু করে স্বর্ণা আক্তার। এই সুযোগে স্বর্ণাকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে নিয়ে যেত ওবায়দুর। তখন থেকে তাদের সম্পর্ক গভীরে রুপ নেয়। এক পর্যায়ে গত তিন মাস আগে ওবায়দুরের সাথে পালিয়ে ঢাকায় চলে যায় সে। এরপর মেয়ের পরিবারের সন্দেহ হলে ওবায়দুরকে একমাত্র আসামী করে গত ২৪ জুলাই ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন স্বর্ণার বাবা কাজী সেলিম। এরপর তারা দু’জনে বিয়ে করেছেন বলে জানায়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষি কাজ করার সময় ওবায়দুরের ওপর হামলা চালায় সেলিম কাজীর ছেলে নিশাত (১৮) ও তার আরেক চাচাতো ভাইয়ের ছেলে ইমন। এ সময় তার দুই পায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে কুঁপিয়ে জখম করা হয়।

শনিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওবায়দুর কাজী বলেন, আমার দুঃসম্পর্কীয় এক আত্মীয়ের মেয়ের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমরা দু’জনে বিয়েও করেছি। বর্তমানে আমরা সংসার করছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার আমার স্ত্রীর দুই ভাই আমার উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে।

স্বর্ণার বাবা সেলিম কাজী বলেন, ওবায়দুর এমন কাজ করবে কখনো ভাবতে পারিনি। তারা চাচা-ভাতিজি অনেক সময় বাড়িতে কথা বলতো সেটা দেখে কখনো মনে হয়নি তারা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এটা কিভাবে সন্দেহ হবে। কারণ, সে-তো চাচা এবং বিবাহিত। ও (ওবায়দুর) আমার মেয়ে এবং আমাদের ক্ষতি করে ফেলেছে। সমাজে আমরা মুখ দেখাতে পারতেছি না। মানুষ অনেক কথা বলাবলি করছে। আমার ছেলের বন্ধুরা ছেলেকে অনেক খারাপ কথা বলছে। ও হয়তো কথাগুলো সহ্য করতে পারেনি। যে কারণে ওবায়দুরকে মারধর করেছে। এটাই আমাদের অপরাধ।

তিনি বলেন, চাচা হয়ে কিভাবে ভাতিজির সাথে প্রেম করে? এখন শুনতেছি ওরা বিয়েও করে ফেলেছে। আমি এ ঘটনার ন্যায্য বিচারের দাবি জানাই।

স্বর্ণার মা এ ব্যাপারে বলেন, স্বর্ণা আমার খুব আদরের মেয়ে। কত কষ্ট করে ওরে বড় করেছি। আমরা কিভাবে বিশ্বাস করবো, চাচা হয়ে তার ভাতিজাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলিয়ে বিয়ে করবে। ও (ওবায়দুর) আমার কলিজা ছিড়ে নিয়ে গেছে। আমার ছেলে আমাকে বলতো, মা আপুকে নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন ছিলো। এখন আপুইতো আমাদের চিনে না। আমার ছেলে হয়তো এগুলো সহ্য করতে পারেনি, ওর বোনকে এভাবে নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ওবায়দুরকে মারধর করার পর ওর (ওবায়দুর) ভাগ্নে চরচাঁদপুর গ্রামের হেদায়েত, শোয়েব, ইব্রাহিম, সিরাজ সহ কয়েকজন প্রকাশ্যে চাপাতি নিয়ে আমাদের বাড়ির চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। আমার ছেলেকে ওরা যেখানে পাবে সেখানেই নাকি মেরে ফেলবে। এখন আমি আমার ছেলেকেও হারাতে চাই না, মেয়েতো হারিয়ে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের এক স্বজন জানায়, ওবায়দুর স্বর্ণাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে। ওদের দু’জনের বয়সের তফাত ২০ বছর।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights