রফিক প্লাবন
দিনাজপুর প্রতিনিধি।।
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। হাসিনা সরকার নির্বাচিত নয়। এরা দীর্ঘ দিন ধরে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। আবারও তারা ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো একতরফা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এবার বাংলাদেশের মানুষ আর বোকামি করবে না, এবার তারা ঘুরে দাড়িয়েছে। তারা চিৎকার করে বলছে- এবার শেখ হাসিনার ঝাড়িঝুড়ি আর খাটবে না।
মানুষকে যতই বোকা বানাতে চেষ্টা করেন, এদেশের মানুষ আর বোকা বনবে না।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদল আয়োজিত শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ ১ দফা দাবীতে রংপুর থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত ‘তারুণ্যের রোড মার্চ’ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে দিনাজপুর শহরের বটতলী ট্রাক টার্মিনালে রোড মার্চের সমাপনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশকে এতটুকু ভালোবাসেন বলে মনে হয় না। আপনার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। নূন্যতম যদি ভালোবাসা থাকে তাহলে দয়া করে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। তা না হলে এই দেশের জনগন অতিতে যেভাবে স্বৈরাচারি সরকারের পতন ঘটিয়েছিল, আপনাদেরও সেই ভাবেই পতন ঘটাবে।
দিনাজপুর জেলা বিএনপি’র তীর্থ স্থান উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দলের চেয়ারম্যান পারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম স্থান এই দিনাজপুরে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দী অবস্থায়। একই সঙ্গে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, এবার শুধু বিএনপি নয়, বামফ্রন্ট, ইসলামি আন্দোলন এবং অন্যান্য দলগুলো এবার এক হয়েছে। তারা এখন বলছে- এই সরকারের অধিনে কেউ নির্বাচনে যাবো না। কারণ এই সরকারের অধিনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। গত ১৫ বছরে বর্তমান সরকার সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙ্গে দিয়েছে। পার্লামেন্টকে একটি রাবারষ্ট্যাম্প পার্লামেন্ট বানিয়েছে, যেখানে পার্লামেন্ট সদস্যরা নির্বাচিত নয়। আজকে বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ দলীয়করণ করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রথমে ৫ বছর পরে আবার ১০ বছর সাজা দিয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছেন। তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকেও সাজা দিয়েছে। বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতে জামিন নিতে গেলে জামিন দেয়া হয় না। মিথ্যা মামলায় দিনের পর দিন বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে রাখা হয়েছে। লুটেরা, অনির্বাচিত ও ফ্যাসিবাদী এই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আজকের এ তারুণ্যের রোডমার্চ।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, পৃথিবীর সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশগুলো বলছে- বাংলাদেশে অতিতের দুটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই। এবার নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। অংশিদারিত্বমুলক হতে হবে। নির্বাচনে যাতে সমস্ত দল অংশ নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু তাই নয়, বিখ্যাত নিউইয়র্ক টাইমস বলছে- বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরবে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। এমনকি ভারতের এক মিডিয়া বলেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। অর্থাৎ সমগ্র পৃথিবী বলছে- বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, নির্বাচন দিতে হবে, যেটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, বিএনপি’র পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর বিভাগীয় বিএনপি’র আহবায়ক আব্দুল খালেক, রংপুর বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর পৌর সভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, রংপুর জেলা বিএনপির’র আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।
রোড মার্চে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
