সিরাজুল ইসলাম
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি।।
সারাদেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় গবাদিপশুর মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রানঘাতী ল্যাম্পি ভাইরাস। খবর পাওয়া যাচ্ছে, এর কোনো প্রতিষেধক না থাকায় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে খামারিরা। এলএসডি গরুর জন্য একটি ভয়ঙ্কর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ, যা খামারের ক্ষতির কারণ।
জানা যায়, ১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে এ রোগ দেখা দেয়। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে মহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। মশা-মাছি বাহিত রোগটি মূলত মশার মধ্যমেই বেশি ছড়ায়। আক্রান্ত গরু সুস্থ হতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। দিন দিন গরু-বাছুর দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মারাও যায়।
একটি খামারকে অর্থনৈতিকভাবে ধসিয়ে দিতে খুঁরা রোগের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর রোগ এটি। হরিপুর উপজেলার টেংরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সরিফ জানান, প্রাথমিকভাবে আমার একটি গরুর এই রোগটি দেখা দিয়েছে। গুটি বসন্তের মত কিন্তু ধীরে ধীরে সমস্ত শরীর গুটি গুলো বড় হয়ে ছেয়ে গেছে এবং জায়গায় জায়গায় ক্ষত হয়ে যাচ্ছে। গরু খামারী হোসেন আরা জানান, আমার খামারে প্রায় পাঁচটি বিদেশি গরু আছে তার মধ্যে আমার একটি গরুর বাছুরের অবস্থা আশংকাজনক। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের লোকসানের প্রহর গুনতে হবে।
গবাদি পশু চিকিৎসক আব্দুস সামাদ জানান, প্রাথমিক ভাবে এই রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ার কারণে খুব সহজে একটি পশু হতে অন্য পশুতে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি হলে গবাদি পশুর জ্বর, পাতলা পায়খানা, খাওয়ার অরুচি, সমস্ত শরীরে গুটি বসন্তের মত উঠতে থাকা এবং ফেটে ক্ষত হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে। তাই কোন গবাদি পশু প্রাথমিক ভাবে আক্রান্ত হলে অপর পশুগুলো থেকে দ্রুত আলাদা করে রাখতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্হা হিসেবে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় এবং জ্বর কমানোর জন্য ফাস্ট ভ্যাট অর্থাৎ প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করা যেতে পারে। তবে এই ল্যাম্পি ভাইরাসটি বিশ থেকে একুশ দিনের মাথায় নিজ থেকে সেরে যায়। কখনো গরুর মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম।