।।বিশেষ প্রতিবেদক।।
রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে চারপাশজুড়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শিবিরে নজরদারি বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত একটি সভাও হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ সচিবরা ছিলেন সেই বৈঠকে। বৈঠকে প্রত্যাবাসনকে সম্ভব করে তোলার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।
সেখানে আরও যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো হলো: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রাত্রিকালিন যৌথ টহল, ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের নৌপথে অন্য স্থানে যাতায়াত বন্ধ করা, নতুন করে অবৈধ প্রবেশ নিষিদ্ধ, টেলিটকের সিম বিক্রির অনুমতি, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রচার বাড়ানো। এ ছাড়াও ফেসবুক ও ইউটিউবে অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতা নিয়ে আসা ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী তার স্বাগত বক্তব্যে বলেছেন, ক্যাম্পের অভ্যন্তরে মাদকের ব্যবসা ও সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন বাহিনীর যৌথ টহল ও অভিযান বাড়ানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে তিনি সীমান্তে মাদক চোরাচালান বন্ধ করার জন্য সীমান্ত বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভায় বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের তুলনায় তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপারে তাদের মনোযোগ বেশি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসতে হবে। যেন এই দুর্ভোগ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায়।
বৈঠকে জননিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট একজন জেষ্ঠ্য সচিব বলেছেন, বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছে। তহবিল ঘাটতির কারণ দেখিয়ে জাতিসংঘ খাদ্য সহায়তা কমানোর যে পরিকল্পনা করেছে তাতে খাদ্য নিরাপত্তার সংকট ও পুষ্টিহীনতা আরও ঘনীভূত হবে। বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হলে তারা কাজের খোঁজে আরও মরিয়া হয়ে উঠবে। তাতে তাদের ক্যাম্পের মধ্যে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়বে। আইনগতভাবে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে কাজের সুযোগ নেই। ক্যাম্প থেকে পালিয়ে অনেকেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে চেপে সাগরপথে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। চিফ অব জেনারেল স্টাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার অনুরোধ জানান।