আজ ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

গণমাধ্যমের প্রতি অভিযোগ তুলে সিইসির দুঃখ প্রকাশ

  • In গণমাধ্যম, জাতীয়
  • পোস্ট টাইমঃ ২৬ জুন ২০২৩ @ ০৭:৪৮ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২৬ জুন ২০২৩@০৭:৫৪ অপরাহ্ণ
গণমাধ্যমের প্রতি অভিযোগ তুলে সিইসির দুঃখ প্রকাশ
ছবি- ফাইল ছবি

।।নিজস্ব প্রতিবেদক।।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের মন্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমন সংবাদের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি অভিযোগ তুলে তার মন্তব্যে কেউ কষ্ট পেলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি)। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

সাংবিধানিক এ সংস্থার বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে এবং কোনো রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর প্রতি অনুরাগ বা বিরাগভাজন না হয়ে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি কখনো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের সুনাম ও সম্মানের হানি ঘটে, এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্ণিত প্রার্থীর মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে প্রচারিত সংবাদ ও বক্তব্য সম্পূর্ণ অলীক, মনগড়া, অনুমান নির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণা প্রসূত। উক্তরূপ অসত্য সংবাদ ও বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

ইসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আনুমানিক বিকেল পাঁচটার দিকে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের পক্ষে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা ও রক্তাক্ত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের ‘উপর্যুপরি প্রশ্নের জবাবে’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ওই প্রার্থীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছেন। বিষয়টি বিকৃতভাবে ও ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ওই প্রার্থীকে কটাক্ষ করেছেন এবং তাঁর মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও নির্বাচন কমিশনকে হেয়প্রতিপন্ন করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশনের গোচরীভূত হয়েছে।

ইসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রকৃত বিষয় হলো, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্ণিত প্রার্থীর ওপর আক্রমণ হওয়ার ঘটনা অবহিত হওয়ামাত্রই প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারগণ দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাগণকে নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশনের উক্ত নির্দেশনার আলোকে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্তপূর্বক বর্ণিত বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন মর্মে ১৪ জুন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। ওই প্রতিবেদনসমূহ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে মো. মঈনুল ইসলাম স্বপন ও মো. জহিরুল ইসলাম রেজভীকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও অন্য অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে শনাক্তকরণসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে এবং উক্ত বিষয়টি নির্বাচন কমিশন সার্বক্ষণিক তদারকি করে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক নেতা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ইসি সংক্রান্ত যেকোনো বক্তব্য, সংবাদ প্রদান ও প্রচার এবং এ বিষয়ে অনুমান নির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণা প্রসূত মন্তব্য ও সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানায় ইসি।

এর আগে গত ১২ জুন বরিশাল সিটি ভোটের দিন হামলার শিকার হন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। ভোট শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকেরা সিইসির কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন,একজন মেয়রপ্রার্থীকে রক্তাক্ত করা হলেও এই নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ বলা যায় কি না? জবাবে সিইসি বলেছিলেন, ‘এটা আপেক্ষিক। রক্তাক্ত সবকিছু আপেক্ষিক, উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? উনার রক্ত ক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি উনাকে কেউ পেছন থেকে ঘুষি মেরেছে। উনিও বলেছেন, ভোট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে।

সিইসির এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’ এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা, পদত্যাগ ও ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ২২ জুন সিইসি বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights