।।ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক।।
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি রিগোজিন দেশটির সামরিক নেতাদের উৎখাতে ‘শেষ পর্যন্ত যাওয়ার’ শপথ নিয়েছেন। ক্রেমলিন ‘সশস্ত্র বিদ্রোহে’ অভিযুক্ত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই শপথ নেন তিনি। খবর বিবিসির।
ইয়েভজেনি রিগোজিন জানিয়েছেন, তার যোদ্ধারা ইউক্রেন থেকে সীমান্ত পার করে রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে। এই সেনারা রোস্তভ শহরে প্রবেশ করছে বলেও জানান তিনি। রিগোজিন বলেন, সামনে কেউ দাঁড়ালে তাদের ধ্বংস করে দেবে তার সেনারা। শহরের বাসিন্দাদের শান্ত এবং ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর।
রিগোজিন দাবি করেছেন তার বাহিনী রাশিয়ার একটি সামরিক হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে। ওই হেলিকপ্টারটি ‘বেসামরিক বহরের ওপর গুলি চালানো শুরু করে’ বলে দাবি তার। তবে কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে তা জানাননি তিনি। আর তার বর্ণনাও তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা যায়নি।
ওয়াগনার গ্রুপ রাশিয়ার একটি বেসামরিক ভাড়াটে সেনাবাহিনী। তারা ইউক্রেনে রাশিয়ার নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধ করছে। রাশিয়ায় যুদ্ধ কিভাবে পরিচালিত হবে তানিয়ে উত্তেজনা বাড়ছিল। গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমালোচনা শুরু করেন রিগোজিন।
গত শুক্রবার ৬২ বছর বয়সী ভাড়াটে সেনাদল নেতা অভিযোগ করেন তার বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। তিনি এই হামলায় জড়িতদের শাস্তির শপথ নেন। তিনি এই হামলার কোনো প্রমাণ দেননি। আবার কর্তৃপক্ষ হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে এবং ওয়াগনার প্রধানকে তার ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক অডিও বার্তায় ওয়াগনার প্রধান বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের ‘দানবদের’ থামাতে হবে। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের সেনা হত্যা করেছে এবং (ইউক্রেন যুদ্ধে) রাশিয়ার হাজার হাজার সেনা হত্যা করেছে তাদের শাস্তি দেয়া হবে। আমি আপনাদের বলবো প্রতিরোধ করবেন না। যারা করবে তাদের হুমকি বিবেচনা করা হবে এবং ধ্বংস করা হবে। এটা কোনো সামরিক অভ্যুত্থান নয়, বিচারের জন্য যাত্রা। আমাদের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর পথে বাধা হবে না।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র। শুক্রবার রাতে রাজধানী মস্কোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, সব সরকারি ভবন ও যান অবকাঠামোগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
রাশিয়ার লিপেটস্ক অঞ্চলের গভর্নর বাসিন্দাদের দক্ষিণ দিকে যেতে নিষেধ করেছেন। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ২৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লিপেটস্ক।
শুক্রবার রাতে এক টুইট বার্তায় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা দেখছি। এদিকে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং মার্কিন মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।