।।নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দীর্ঘ ৩২বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন দেশের বহুল আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া(৭৩)। আজ রোববার বেলা ১১টা ৪৬ মিনিটে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার চন্দ্র ঘোষ।
শাহজাহান ভূঁইয়ার বাড়ি নরসিংদীর পলাশ থানার ইছামতী গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত। জেলে থাকার কারণে তিনি সময় মতো বিয়ে করতে পারেননি।
কারা সূত্রে জানা যায়, সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় কয়েদি থেকে জল্লাদের কাজ করেছেন শাহজাহান। একএক করে ২৬অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেতে। অবশেষে সেই আশা পূরণ হচ্ছে আজ।
সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, জল্লাদ শাহজাহান ২০০১সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৬জনের ফাঁসি দিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, চারজন যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি নেতা বাংলাভাইসহ দুজন জেএমবি সদস্য এবং আরও ১৪জন অন্য আলোচিত মামলার আসামির ফাঁসি কার্যকর করেছেন তিনি।
তিনি জানান- শাহজাহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জরিমানার ১০হাজার টাকা কারা কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করেছে।
জানা যায়, ১৯৯১সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৩৬টি মামলায় শাহজাহানের ১৪৩বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭বছরের সাজা মাফ করে তাকে ৫৬বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদণ্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩বছরে এসে নামে। দুটি মামলায় পাঁচ হাজার টাকা করে ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস করে অতিরিক্ত এক বছর জেল খেটে ৩২বছর পর ১৮জুন মুক্ত আকাশে শ্বাস ফেলার সুযোগ পাবেন জল্লাদ শাহজাহান।
সহযোগী জল্লাদ হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে শাহজাহান তার জল্লাদ জীবনের সূচনা করেন। এরপর কারাগারে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় আসলেই ডাক পড়তো তার। টানা আট বছর এই কাজ করার পর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রধান জল্লাদের স্বীকৃতি দেন।
এদিকে, সকাল থেকেই শাহজাহানের মুক্তির খবর সংগ্রহের অপেক্ষায় জেল গেটের ভিতরে অবস্থান করছে সাংবাদিকরা। অবশেষে মুক্তি পেল জল্লাদ শাজাহান।