আজ ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সাপে কাটলে যা করণীয়ঃ

  • In লাইফস্টাইল
  • পোস্ট টাইমঃ ১৫ জুন ২০২৩ @ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ১৫ জুন ২০২৩@১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ
সাপে কাটলে যা করণীয়ঃ

।।বিডি হেডলাইন্স ডেস্ক।।

চলছে বর্ষাকাল। দিনরাত যেখানে সেখানে, যখন তখন হতে পারে বৃষ্ট, জলবদ্ধতা জমতে পারে পানি। বর্ষা মৌসুমে এবং বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের মতো সাপও বাস্তুহীন হয়ে পড়ে। যার কারণে সাপ যেখানে সুযোগ পায়, সেখানেই আশ্রয় নেওয়ার চেষ্ট করে। ফলে এ সময়টায় সাপে কাটার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৯সালের অক্টোবরে প্রকাশিত সর্বশেষ এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুমে প্রতি বছর অন্তত ৫লাখ ৮০হাজার মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয় এবং মারা যায় অন্তত ছয় হাজার মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে- সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মূল কারণ সচেতনতার অভাব।

তবে সাপে কামড়ালেই যে বিষক্রিয়া হয়, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ এমন কিছু সাপ আছে যাদের বিষ নেই। সাপে কামড়ানো চিকিৎসার ক্ষেত্রে, কি সাপে কামড়েছে সেটা জানা থাকলে চিকিৎসার সুবিধা হয়। কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই বুঝতে পারবেন সাপে কামড়ানো ব্যক্তির বিষক্রিয়া হয়েছে কি না।

বিষধর সাপে কামড়ালে এই লক্ষণগুলো থাকবে- দুচোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসবে, কামড়ের স্থানে প্রচুর জ্বালা যন্ত্রণা হবে, সব কিছু ঝাপসা দেখবে রোগী, ঢোক গিলতে অসুবিধা হবে, গলা বন্ধ হয়ে আসবে ও শরীর ফুলে ওঠবে।

অপরদিকে নির্বিষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত স্থানে সামান্য ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা অল্প ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে এসব লক্ষণ থাকলেও ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়, যেকোনো রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত।

সাপে কাটলে করণীয়ঃ

👉বিশেষজ্ঞদের মতে- সাপে কাটলে যথাসাধ্য শান্ত থাকতে হবে। আতঙ্ক বা ভয় হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেবে। যদি সাপটি বিষধর হয় তাহলে হৃদকম্পনের কারণে শরীরে দ্রুত বিষ ছড়িয়ে পড়বে। সাপে কাটার স্থান বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। দৌড়ালে বা খুব দ্রুত হাঁটলে বিষ দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যত কম নড়াচড়া হবে তত কম হারে বিষ সারা শরীরে ছড়াবে। তাই সর্বোচ্চ পর্যায়ের শান্ত থাকতে হবে। এমনকি নির্বিষ সাপের কামড়েও শুধুমাত্র হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হওয়ার ঘটনা অনেক বেশি ঘটে।

👉জরুরি কোনো উপসর্গ না থাকলে বিষদাতের চিহ্ন পরীক্ষার জন্য দংশিত স্থান পরীক্ষা করতে হবে। বিষ দাঁতের দাগ প্রায় আধা ইঞ্চি ফাকে দুটি খোচা দেয়ার চিহ্ন হিসাবে অথবা কেবল আচড়ের দাগ হিসেবে দেখা যেতে পারে। দুটো বিষদাঁতের চিহ্ন পরিষ্কারভাবে থাকলে খুব সম্ভবত সাপটি বিষধর, তবু বিষদাঁতের চিহ্ন না থাকলে যে সাপটি বিষধর নয় তা বলা যাবে না।

👉সাপে কাটলে প্রথমেই আক্রান্ত স্থানের উপরে বাঁধন দেয়ার ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি লম্বা কাঠ ও কাপড়ের সাহায্যে আক্রান্ত স্থানটি বেঁধে ফেলতে হবে। খুব বেশি শক্ত করে বাঁধা যাবে না, এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনভাবে বাঁধতে হবে যেন, আক্রান্ত অঙ্গ ও কাপড়ের মাঝে কষ্ট করে একটি আঙুল ঢোকানো যায়।

👉গামছা, ওড়না বা মাফলার দিয়ে অর্থাৎ নরম কাপড় দিয়ে বাঁধন দিতে হবে। বাঁধন দিতে হবে তিনটি। আবার ২০মিনিট পরপর খুলে আবার লাগাতে পারেন। ভুলেও লোহার তার, সুতলি, কারেন্টের তার বা অন্য সরু জিনিস দিয়ে বাঁধা যাবে না।

👉কোনো ধরনের কুসংস্কারমূলক পদক্ষেপ যেমন-হারবাল পেস্ট কিংবা গোবর সাপে কাটা স্থানে লাগানো যাবে না। এতে সেখানে ইনফেকশন বৃদ্ধি পেতে পারে।

👉শরীর থেকে আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট খুলে ফেলতে হবে। কিছু সাপের বিষে আঙুল, হাত বা পা ফুলে যেতে পারে। আংটি বা চুড়ি থাকলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে পঁচন ঘটতে পারে। রোগীকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রোগীর যদি অনেক বেশি বমি হয় অথবা রোগী যদি নাঁকি সুরে কথা বলে কিংবা রোগীর ঢোক গিলতে সমস্যা হলে রোগীকে কোনো কিছু না খাওয়ানোই উত্তম। রোগীকে খাওয়াতে হলে বসিয়ে খাওয়াতে হবে। কাঁশি দিলে বন্ধ করতে হবে।

👉রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে। হাসপাতালে সাপের বিষের প্রভাবপ্রতিরোধী ওষুধ (অ্যান্টিভেনোম) পাওয়া যায়। এটিই বিষধর সাপে কাটা রোগীর জন্য একমাত্র চিকিৎসা

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights