।।বিডিহেডলাইন্স ডেস্ক।।
আমের স্বাদ পছন্দ নয়, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বরং বাঙালি মানেই আম প্রেমী। নিয়মিত আম খাওয়ায় আমাদের জুড়ি নেই। এখন বাজারে সর্বত্রই এখন আমের ছড়াছড়ি। আর ব্যাগে চেপে সেই ফল পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে। তারপর খাওয়া চলছে রসিয়ে। এটাই বর্তমান সময়ের প্রায় সকল ঘরের ছবি।
আম বাঙালির এমন আম প্রীতি দেখে বেজায় খুশি বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, আমে রয়েছে একাধিক ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। আর এই সকল উপাদান কিন্তু দেহের উপকারে ভীষণই প্রয়োজনীয়। তাই নিয়মিত আম খেলে শরীর সুস্থ থাকে। বহু রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
তবে সব ভালোরই কিছু খারাপ দিকও থাকে। আমও এর বিপক্ষে নয়। গবেষকদের কথায়, কিছুকিছু ব্যক্তিদের অবশ্যই আম খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। নইলে তাঁদের শারীরিক সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর দিকে যেতে পারে।
এমন ভরা মৌসুমে আম থেকে কারা সমদূরত্ব নীতি বজার রেখে চলবেন? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে যে প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়তেই হবেঃ
১. অ্যালার্জির ফাঁদে পড়তে পারেনঃ যে কোনও খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। এমনকী বিভিন্ন ধরনের ফল খেলেও অনেকের এই সমস্যা হয়। এই যেমন ল্যাটেক্স অ্যালার্জি থাকলে আম খেলে আর রক্ষে নেই। কারণ আমের প্রোটিন ও ল্যাটেক্সের মধ্যে অনেকটাই মিল রয়েছে। তাই শরীর আমের প্রোটিনকে ল্যাটেক্স ভেবে ভুল করে বসে। এই কারণে ব়্যাশ, চুলকানি, পেটে ব্যথা, গ্যাস, অ্যাসিডিটি সহ একাধিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই ল্যাটেক্স অ্যালার্জি থাকলে আম না খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এর মাধ্যমেই সুস্থ থাকবে শরীর।
২. সুগারের কাঁটা মাত্রা ছাড়াতে পারেঃ হাই ব্লাড সুগারের মতো সমস্যা থাকলে খাবার নিয়ে সচেতন হওয়া কিন্তু অত্যন্ত জরুরি। নইলে চোখ, কিডনি, হার্ট ও স্নায়ুর বারোটা বাজতে সময় লাগে না। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার ডায়াবেটিস্ রোগীদের ডায়েট নিয়ে সচেতন করে থাকেন। প্রসঙ্গত, আমে রয়েছে প্রাকৃতিক সুগার। আর এই সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় খানিকটা বেশি। তাই আম খাওয়ার মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায় বলে জানাচ্ছে, ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিবেদন। এই কারণেই ডায়াবিটিস্ রোগীদের আম খেতে হবে মেপে। এক্ষেত্রে মাঝমাঝে আমের একটা স্লাইস খেলে তেমন বড় কোনও সমস্যার আশঙ্কা নেই।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটের সমস্যার বিপদ বাড়ায়ঃ আসলে আমে খুব বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকে না। তাই আম বেশি পরিমাণে খেলে পেটের হজম শক্তির উপর চাপ পড়ে। এমনকী কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটের একাধিক সমস্যা এই ফাঁকে নাস্তেনবুদ করে তুলতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যায় ভুক্তভোগী রোগীরা অবশ্যই কম পরিমাণে আম খান। নইলে যে জটিলতা আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে। তবে আমের একটা ছোট অংশ খেলে এই ধরনের সমস্যা বাড়াবাড়ি দিকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
৪. ওজন বাড়ার আশঙ্কাঃ ওজন বাড়লে একাধিক জটিল অসুখ পিছু নেয়। এই তালিকায় ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল থেকে শুরু করে একাধিক বিপাকীয় সমস্যা রয়েছে। তবে নিয়মিত আম খেলে ওজন কমার পরিবর্তে বাড়তে পারে। আসলে আমে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ক্যালোরি। এই অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালোরির গুঁতোয় ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই আম খাওয়ার পরিমাণে রাশ টানতে হবে।
৫. একদম বন্ধ নয়ঃ আগেই বলেছি, আমে রয়েছে পুষ্টি উপাদানের ভাণ্ডার। তাই রোগ দূর করার কাজে এর কোনও জুড়ি নেই। সুতারাং আম খাওয়া একবারে ছেড়ে দেওয়ার কোনও অর্থই হয় না। বরং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ মতো এই ফলকে ডায়েটের অংশ করে তুলুন। তাহলেই দেখবেন আম খেতেও পারছেন, আবার সমস্যাও হচ্ছে না।