।।বিশেষ প্রতিনিধি ।।
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজন ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “রক্ত দান করুন, দান করুন প্লাজমা, যতবার সম্ভব গ্রহণ করুন জীবন বাঁচানোর এ অনন্য সুযোগ”। দেশে রক্তের চাহিদা পূরণে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিকভাবে প্রতি বছর বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশ আলজেরিয়া। ২০০৪সালে দিবসটি প্রথম পালিত হয়। নিরাপদ রক্ত নিশ্চিতকরণ ও স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উৎসাহ দিতেই বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে এই দিবসটি।
বাংলাদেশে দিবসটি পালনে সরকারি নানা উদ্যোগের পাশাপাশি এবারও এগিয়ে আসছে সাড়ে চার লক্ষাধিক সুসংগঠিত ডোনার পুল নিয়ে গঠিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। বিকালে রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে প্রথমবারের মতো দুই শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতা ও দুই শতাধিক থ্যালাসেমিক রক্তগ্রহীতার মিলনমেলা এবং বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করছে কোয়ান্টাম। স্বেচ্ছা রক্তদাতারা নীরবে তাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রক্ত দান করে যান। রক্তদানের সময় তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানেনও না- এ রক্ত কোন মানুষটির শরীরে বইবে। একইভাবে রোগীদের কাছেও অচেনা থেকে যান রক্তদাতারা। দাতা-গ্রহীতার আনন্দ আর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের এমন আন্তরিক বন্ধনে উদ্বুদ্ধ হবেন নতুন রক্তদাতা, এমনই আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
এ দেশে রক্ত চাহিদার একটা বড় অংশ প্রয়োজন হয় থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্যে। হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়- দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮০হাজার। থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে এক কোটি সত্তর লাখেরও অধিক মানুষ। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়ছে। একজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর প্রতি মাসে ১থেকে ৩ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। থ্যালাসেমিয়া ছাড়াও রক্তস্বল্পতা, প্রসূতির রক্তক্ষরণ, অগ্নিদগ্ধ রোগী, বড় অপারেশন, দুর্ঘটনা ইত্যাদি নানা কারণে রক্তের প্রয়োজন হয়। রক্তের এ চাহিদা পূরণে নতুন স্বেচ্ছা রক্তদাতার কোনো বিকল্প নেই। সাধারণত ১৮থেকে ৬০বছর বয়সী যেকোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ সক্ষম ব্যক্তি প্রতি চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারেন।
প্রসঙ্গত, দেশে প্রতিবছর প্রায় ৮থেকে ১০লাখ ব্যাগ রক্ত ও রক্ত সংগ্রহের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে কোয়ান্টাম বছরে সরবরাহ করে এক লক্ষাধিক ব্যাগ। বাকি চাহিদা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ের ডোনারদের কাছ থেকে মেটে। এই দিবসটির গুরুত্ব খুব অর্থবহ। কারণ একবাক রক্ত বাঁচাতে পারে একটি মানুষের জীবন।