আজ ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনের শহরে মরুর আভাঃ লোডশেডিং আর গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

  • In সারাবাংলা
  • পোস্ট টাইমঃ ৬ জুন ২০২৩ @ ০৬:৪২ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ৬ জুন ২০২৩@০৬:৪২ অপরাহ্ণ
সুন্দরবনের শহরে মরুর আভাঃ লোডশেডিং আর গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

নির্ঝর রায়।
ফুলতলা প্রতিনিধি।

ফুলতলা উপজেলার গ্রামগুলোতে বিদ্যুতের লোডশেডিং ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যে কোনো সময় চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। কোনো কোনো এলাকায় একটানা এক ঘণ্টার বেশি থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে আষাঢ়ের ভ্যাপসা গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার জামিরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আতিয়ার মোল্যা বিডি হেডলাইন্সকে বলেন, প্রতিদিন সকালে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া দিয়ে শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে আসা যাওয়া করতেই থাকে। প্রচন্ড গরমে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রদান করতে তারা ব্যহত হচ্ছে। লোডশেডিং এর কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনায় অনেক পিছিয়ে পড়ছে। কৃষিকাজেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অত্র অঞ্চলের কৃষকেরা। গভীর রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় সিসিটিভি বন্ধ হয়ে পড়ছে, এই সুযোগে চুরি ডাকাতির পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে।

ছবি বিডি হেডলাইন্স

উপজেলার আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুরাইয়া পারভীন বলেন, তীব্র গরমের ফলে বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেছে। রাস্তায় বের হলে মনে হচ্ছে শরীরে আগুনের ফুলকি এসে লাগছে। সুন্দরবনের শহরে মরুর আভা পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলা কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। অবশ্য রাতে ঘরে ফিরেও স্বস্তি থাকার উপায় নেই। দফায় দফায় লোডশেডিংয়ে রাতেও ঘেমে ভিজে নাকাল হচ্ছে মানুষ।

উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বর রিক্তা বেগম জানান, আগের মতো আবারও লোডশেডিং নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎ গেলে আর আসে না। সেই আগের মতো লোডশেডিংয়ের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বিদ্যুতের সমস্যা খুব বেশি হচ্ছে।

একই উপজেলার আলকা এমসিএসকে গেইটের পাশের বাড়ি গুলোর সদস্যরা বলেন, সকাল থেকে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে দুই ঘণ্টা থাকে না, থাকলে দুই ঘন্টা থাকেনা- এইভাবে চলতে থাকে। সন্ধ্যার পরে যায় আর আসে রাত নয়টার পর। আবার আধা ঘণ্টা পরে চলে যায় রাত এগারোটার পরে আসে। আবার বারোটার পরে যায় ফজরের পরে আসে। দিন রাত মিলিয়ে ৬/৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না।

ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অসহনীয় গরম আর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ হয়তো কিছুটা কমবে।

মঙ্গলবার দুপুরে ফুলতলা বাজারের ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। কাছে গিয়ে দেখা গেল অন্য এক চিত্র। সবাই চার্জার ফ্যান কিনতে ব্যস্ত। কিন্তু পাচ্ছেন না। আবার পেলেও দ্বিগুণ দাম নিতে হচ্ছে। এ নিয়ে আবার কেউকেউ বিক্রেতার সঙ্গে বাক -দ্বন্দেও জড়িয়ে যাচ্ছেন। দোকানির কাছে পন্যের দ্বিগুন মুল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ব্রান্ডের ফ্যান গুলো সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না, যা পাওয়া যাচ্ছে তা পাইকারি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

রিকশাচালক শহিদুল বলেন, সূর্যের অনেক তাপ। রোদে সারা শরীর পুড়ে যায়। ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত আর বিকেলে ৫টার পর থেকে গরম কিছুটা কম থাকে। সকাল ১০টার পর থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রচণ্ড তাপদাহ থাকে। মনে হয় যেন চামড়া জ্বলে যাচ্ছে, শরীর ঘেমে যায়। শরীর দুর্বল হয়ে আসে। রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হয়।

খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জিল্লুর রহমান লোডশেডিং সম্পর্কে বলেন, পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক প্রায় ৪লাখ। লোডশেডিংয়ের খুব খারাপ অবস্থা। খুলনা জেলায় পল্লী বিদ্যুতে ৬৫-৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেখানে ঘাটতি ১৫মেগাওয়াট। মাঝে মধ্যে ঘাটতি অনেকাংশে বেড়ে যায়। তিনি আরোও বলেন গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে।

নিরা/কেএইচ/তারিখঃ ০৬০৬২৩/১৮:৩৪

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights