আজ ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ: প্লাস্টিক দুষণ কমিয়ে জলবায়ু সুরক্ষার অঙ্গীকার

  • In জাতীয়, শীর্ষ
  • পোস্ট টাইমঃ ৫ জুন ২০২৩ @ ০৬:৪৬ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ৫ জুন ২০২৩@০৬:৪৬ অপরাহ্ণ
বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ: প্লাস্টিক দুষণ কমিয়ে জলবায়ু সুরক্ষার অঙ্গীকার

।।নিজেস্ব প্রতিবেদক।।

১৯৭৩ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় পরিবেশ দিবস। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম-ইউএনইপি) প্রতি বছর এই দিবসের আয়োজন করে থাকে। এবারের পরিবেশ দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ^জুড়ে গুরুত্ব পাচ্ছে প্লাস্টিক দুষণের বিষয়টি। এই ধারার দুষণ কমিয়ে জলবায়ু সুরক্ষা নিশ্চিতের পথে হাঁটাকে এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে।

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির হিসেবে, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৪০০ মিলিয়ন টনেরও বেশি প্লাস্টিক উৎপন্ন হয়। এর অর্ধেক শুধুমাত্র একবার ব্যবহারের জন্য তৈরি। মোট প্লাস্টিকের ১০ শতাংশেরও কম পুনর্ব্যবহারযোগ্য। বছরে আনুমানিক ১৯-২৩ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক নদী-সমুদ্র কিংবা হ্রদে গিয়ে মেশে।

পৃথিবীর সুরক্ষা নিশ্চিতের তাগিদে ১৯৭৩ সাল থেকেই পরিবেশ দিবস পালন করে আসছে জাতিসংঘ। বিগত এই ৫০ বছরে জাতিসংঘের এই উদযাপনের পরিসরও যথেষ্ট বেড়েছে। এই বছর সরকার, ব্যবসা এবং সুশীল সমাজ প্লাস্টিক দূষণের সমাধান খুঁজতে বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে বেছে নিয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্লাস্টিক জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্র, জীববৈচিত্র্য এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

বাংলাদেশেও বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রকৃতির অক্ষুণ্ণতা বজায় রেখে প্রতিবেশ সংরক্ষণে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, মানব সম্প্রদায় ও প্রাণিকূলের অস্তিত্বের জন্য দূষণমুক্ত নির্মল পরিবেশের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মানবসৃষ্ট বিভিন্ন উপায়ে আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণ করছি। পরিবেশ দূষণকে আরও বেশি সমস্যাসংকুল করে তুলেছে প্লাস্টিকজাত পণ্যের অপরিকল্পিত ব্যবহার। প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ভোক্তাসাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে প্লাস্টিক পণ্যের পুনর্ব্যবহার ও এর টেকসই বিকল্প উদ্ভাবন খুবই জরুরি উল্লেখ করে মো.সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রকৃতির অক্ষুণ্নতা বজায় রেখে সবাই মিলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ করবো এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সুন্দর সোনার বাংলা বিনির্মাণ করবো- এটাই হোক সকলের ব্রত।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনে আমাদের সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান স্থাপনে যাতে প্রতিবেশ ও পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা পরিপালন করা হয় সে দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সমুদ্র প্রতিবেশ সংরক্ষণ, সমুদ্র দূষণরোধ ও সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা ব্লু-ইকোনমি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশই প্রাণের ধারক ও বাহক। পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন এবং সম্পদের অপরিমিত ব্যবহারের ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশ আজ অনেকটাই বিপর্যস্ত, হ্রাস পাচ্ছে জীববৈচিত্র, বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।

এদিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ এর আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। এবার জাতীয় বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’। পরিবেশ মেলা-২০২৩, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৩-এর উদ্বোধনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীও তিনটি চারা রোপণ করেন। একইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

২০২৩ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণকালে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।’ সে সময় শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমি গাছ লাগিয়েছি। আমি আশা করি- বাংলাদেশের সবাই (জনগণ) এটি (গাছ লাগাতে) অনুসরণ করবেন।’

প্রসঙ্গত, পরিবেশ মেলা’ চলবে ৫ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত এবং বৃক্ষমেলা’ চলবে ৫ থেকে ২৬ জুন এবং ১ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

নিপ্র/এসআর/তারিখ:০৫০৬২৩/১৮:৪৪

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights