নয়ন দাস
শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।
শরীয়তপুর জেলার বিএনপির বেশিরভাগ নেতারাই আত্মগোপনে থাকার খবর পাওয়া গেছে। দলটির কেন্দ্রঘোষিত চলমান আন্দোলন সংগ্রামে জেলার র্শীষ পথধারী নেতাদের মাঠে দেখা যাচ্ছে না। নেতাকর্মীদের অভিযোগ জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বর্তমানে দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল বাতিল, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকার গঠন ও কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে ঘোষিত বিএনপির আন্দোলন নিয়ে শরীয়তপুরের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতারা আত্মগোপনে রয়েছে। ফলে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনার অভাবে ভুগছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এরপর আবার পুলিশি তৎপরতা ও দলের নির্দেশনা সঠিকভাবে না পৌঁছানো সহ বিভিন্ন অভিযোগে ভুগছে দলটি। নেই কোন দলীয় কার্যালয়।
জেলা বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ জেলায় হরতাল-অবরোধের অংশ হিসেবে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। যদিও এসব মিছিলে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল হাতেগোনা। তবে শরীয়তপুর জেলায় কর্মসূচি পালিত হচ্ছেই না। ফলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে মাঠের নেতাকর্মীদের দূরত্ব এর কারণ বলে মনে করছেন অনেকে। তবে নড়িয়া উপজেলায় ঘড়িষারে কয়েকটি কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। গ্রেফতার এড়িয়ে চলার নীতি অনুসরণ করতে গিয়ে দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখছেন না। ফলে কর্মসূচিতেও যথাযথ সমন্বয় হচ্ছে না। এতে হরতাল-অবরোধে সম্মিলিতভাবে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি কমছে।
এছাড়াও শরীয়তপুর জেলার বিএনপির ভিতরে রয়েছে কয়েকটি ভাগ। যে কোন নির্দেশনা আসলে তার ভিন্ন ভিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করলেও এখন আর তা করছেনা।
শরীয়তপুর জেলার বিএনপি সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ ও সাধারন সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন কালুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে, তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি, তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
যুবদলের সভাপতি আরিফুজ্জামান মোল্লার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
শরীয়তপুর যুবদলের সাধারন সম্পাদক জামাল উদ্দিন বিদ্যুৎ জানান, ২৮ অক্টোবর মহা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা বাংলাদেশে ধরপাকড় হচ্ছে, বাড়িত বাড়িতে হামলা হচ্ছে। আমাদের এখানেও বাড়ী বাড়ী পুলিশি তল্লাশি হচ্ছে, গ্রেফতার আতঙ্কে ভয়ে আমরা আত্মগোপনে আছি। আমরা খুব শীঘ্রই আত্মগোপন থেকে বের হয়ে আসবো। চলমান আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করার জন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
শরিয়তপুর জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী ও বর্তমান নড়িয়া উপজেলা যুবদলের সি: যুগ্ন-সাধারন হাজী- মতিউর রহমান সাগর বলেন, মূল দলের চালিকা শক্তি হচ্ছে যুবদল। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে সুপার ফাইভ কমিটি অনুমোদিত হয়, যে কমিটির বয়স প্রায় ৬ বছর অথচ ৫ জনের কমিটিতে তিনটা হচ্ছে গ্রুপ। আজ পর্যন্ত পারেনি একটি পুর্নাঙ্গ কমিটি করতে। তাই আমি মনে করি এই ব্যর্থ কমিটি বিলুপ্তি করে অতিজরুরী কোন ভাইয়ের গ্রুপ বিবেচনা না করে, সকলের সমন্নয়ে ত্যাগিদের দিয়ে একটি কমিটি করে বর্তমান গনতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান ও গতিশীল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ।
শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুল আলম জানান, আমরা আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাচ্ছি। শরীয়তপুরের পুলিশ কাউকে হয়রানি করছে না। ওনাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিএনপির নেতাদের আত্মগোপনে কে যেতে বলেছে।