।।বগুড়া প্রতিনিধি।।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার ৭টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটি আসনের ১১ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। যাচাই-বাছাইকালে মনোনয়নপত্রে তথ্যগত ত্রুটি ও সমর্থকদের স্বাক্ষরে গরমিল পাওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম তাদের প্রার্থিতা বাতিল করেন।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিন রোববার (৩ ডিসেম্বর) বগুড়া-১, ২, ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই করেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী মো. ইবনে সাফি বিন হাবিবের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে তার নামে ঋণ খেলাপি থাকার কারণে মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মোঃ ইউনুস আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এই প্রার্থী প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীর স্বাক্ষরের স্থানে প্রার্থী নিজেই স্বাক্ষর করার কারণে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়।
বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) সংসদীয় আসনে ১৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এই ৭ প্রার্থিই স্বতন্ত্র। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অজয় কুমার সরকারে বিরুদ্ধে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপির অভিযোগ রয়েছে। যা তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেননি। এই আসনের নৌকার প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম খান রাজুর ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক খান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাদ পড়েছেন । মনোনয়নপত্রে দেওয়া তার তথ্যে এক শতাংশ সমর্থনযুক্ত ভোটারের সাক্ষরের তথ্য সঠিক না হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
একইভাবে সমর্থনযুক্ত ভোটারের স্বাক্ষরের তথ্যে ভুল থাকায় বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এরশাদুল হক টুলু, আওয়ামী লীগের সমর্থক ড. জামিলুর রশিদ তালুকদার, বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ, দুপচাঁচিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন এবং জাতীয় পার্টির থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র জাকারিয়া হোসেনের মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের মনোনয়পত্র বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র যথাযথভাবে পূরণ না করার চারটি কারণ উল্লেখ করে তার প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া এই আসনের এনপিপির প্রার্থী মনোয়ার জাহিদের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই প্রার্থী তার মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর স্থানে নিজেই স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় নথির ঘাটতি থাকায় চারজন প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত করা হয়। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) নথিপত্র না দিলে তাদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হবে।
বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বাতিলকৃত প্রার্থীরা ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করার সুযোগ পাবেন। তবে সেক্ষেত্রে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার বগুড়ার বাকি ৫, ৬ ও ৭ আসনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই হবে। যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার বিকাল চারটার পর আমাদের রায়ের কপি নিয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করতে হবে।