।।বগুড়া প্রতিনিধি।।
রাতে বাড়িতে ঢুকলো এক কিশোর। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার শুরু করলে ওই কিশোর গাছে উঠে লুকানোর চেষ্টা করে। বাড়ির লোকজন তাকে গাছ থেকে নামিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করে। গ্রামে চোর ঢুকেছে এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজনও ছুটে এসে গণপিটুনি দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় কিশোর।
রোববার (১৯ নভেম্বর) রাতে বগুড়া সদর উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের কাজী নুরুইল গ্রামে মন্টু মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জয় ইসলাম (১৭) বগুড়া সদরের শাখারিয়া ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের স্বাধীন মিয়ার ছেলে। কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ওসি মো. সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। চোর সন্দেহে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাবে না।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্র জানায়, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাজী নুরইল গ্রামের মৃত মকবুল মাস্টারের ছেলে মটুর বাড়িতে প্রবেশ করে ওই কিশোর। টের পেয়ে মটু এবং তার ভাই আশরাফুলসহ পরিবারের লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে তাকে দেখে ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার শুরু করে। ভয়ে বাড়ির পাশে একটি গাছে উঠে লুকানোর চেষ্টা করে কিশোর। তাকে গাছ থেকে নামিয়ে মারধর করে চুরির অপবাদ দিয়ে বেঁধে রাখে। গ্রামে চোর ঢুকেছে এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ওই বাড়িতে আসে। বিস্তারিত না জেনেই কিশোরকে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।
স্থানীয় দুই ব্যক্তি জানান, ওই কিশোর কেন মন্টুর বাড়িতে এসেছে বিস্তারিত না শুনেই গণপিটুনি দেয় এলাকার লোকজন। গুরুতর আহত কিশোরকে কয়েকজন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও কেউ রাজি হননি। ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরই বাড়িতে তালা লাগিয়ে আত্মগোপন করে মন্টু মিয়া ও তার ভাই আশরাফুল ইসলাম।
নিহত জয় ইসলামের স্বজনরা জানান, সে চোর না। তাকে কেন হত্যা করা হয়েছে জানে না কেউ। মোবাইলে টাকা রিচার্জের কথা বলে রাতে বাড়ি থেকে বের হয়। কিছুক্ষণ পরই ফিরবে বলে গেলেও সে আর বাড়িতে আসেনি।