হারুন-অর-রশীদ
ফরিদপুর প্রতিনিধি।।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলাশ অষ্টম শ্রেণির এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর ধুমধাম করে বাল্যবিয়ের আয়োজন চলছে।
বৃহস্পতিবার(১২ অক্টোবর) গায়েহলুদের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিয়ের চলছে বিয়ের ধুমধাম অনুষ্ঠান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিলারচর এলাকার কে,এম,ডাঙ্গী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. মোয়াজ্জেম খানের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৬ বছর বয়সী মেয়েকে পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলার কাজী ডাঙ্গী গ্রামের এক সৌদি আরব প্রবাসীর সাথে বাল্য বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান এ বাল্য বিয়ের সহযোগিতা করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
মাদরাসা সূত্র জানায়, ওই মেয়েটি এবছরের ৮ মে উপজেলার ছনের মসজিদ মোড় সংলগ্ন ‘ইকরা ইসলামিয়া মহিলা মাদরাসায় কিতাব খানার জামাতে না্হবেমির শ্রেণিতে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে সে গত ৩১ আগষ্ট মাদরাসায় পড়াশুনা বন্ধ করে বাড়িতে চলে আসে। ভর্তি ফরমে জন্মসনদ নাম্বার অনুযায়ী মেয়েটির ১৬ বছর উল্লেখ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কে,এম, ডাঙ্গী গ্রামে মেয়েটির বাড়ির প্রধান রাস্তা থেকে মেয়ের বাড়ি পর্যন্ত দুই পাশে আলোকসজ্জা দিয়ে বিয়ে বাড়ির গেট বানানো হয়েছে। এছাড়া বিয়েতে নাচ-গানের জন্যও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদের আয়োজনও সম্পন্ন হয়। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের সমস্ত আয়োজন চলছে।
মেয়েকে বাল্য বিবাহ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়েটির বাবা মো. মোয়াজ্জেম খান বলেন, আমার মেয়ের বয়স ১৮ বছরের বেশি হয়েছে। তাই আমরা আমাদের মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছি। এতে সমস্যা কি?
এ বিষয়ে মেয়েটির মা সালমা আক্তার বলেন, আমার মেয়ের বয়স ১৯ বছর। মাদ্রাসায় ভর্তি ফরমে বয়স কম দেখানো হয়েছে। জন্ম নিবন্ধনসহ সব কাগজ পত্রে জন্মতারিখ ঠিক আছে। এটা কোন বাল্য বিবাহ নয়।
এ ব্যাপারে ইকরা ইসলামিয়া মহিলা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মইন বলেন, জানামতে মেয়েটি এ বছরের মে মাসে আমাদের মাদরাসায় ‘কিতাব খানার জামাতে নাহবেমির’ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। মেয়েটি মাদরাসায় তিন মাস পড়াশুনা করার পর হটাৎ করে মাদরাসায় আসা বন্ধ করে দেয়। মাদরাসায় ভর্তি ফরমে মেয়েটির জন্মসনদ নাম্বার অনুযায়ী তার বর্তমানে ১৬ বছর চলছে। ভর্তি ফরমে বয়স অনুযায়ী মেয়েটি এখনো বিয়ের উপযুক্ত হয়নি বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেওয়ান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা ছিলোনা। খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে। আমরা বাল্যবিয়ে বন্ধে বদ্ধপরিকর।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাদ খানের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তিনি মোবাইল নাম্বারটা রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদি মোর্সেদের মোবাইলে একাধিক যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। তিনি মোবাইল নাম্বারটা রিসিভ করেননি। যার কারণে তার বক্তব্যও জানা সম্ভব হয়নি।