আজ ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ফরিদপুরে ফোঁড়া রোগে মারা গেল ২০ ফ্রিজিয়ান গরু

  • In উদ্যোক্তা, কৃষি
  • পোস্ট টাইমঃ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ @ ১১:৫৯ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩@১১:৫৯ অপরাহ্ণ
ফরিদপুরে ফোঁড়া রোগে মারা গেল ২০ ফ্রিজিয়ান গরু

হারুন-অর-রশীদ
ফরিদপুর প্রতিনিধি।।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুরে “দি পদ্মা ক্যাটেল ফার্মে” ফোঁড়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিজিয়ান ৭ টি গাভী ও ১৩ টি বাছুর মারা গেছে। এক মাস আগে ফোঁড়া রোগের ভ্যাকসিন প্রদান করার পরেও খামারের ৫৫ টি গাভী বাছুরের মধ্যে এক সপ্তাহে ২০ গাভী ও বাছুর মারা যাওয়ায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারী।

গত ০২ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মারা যায় গরুগুলো। তবে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ফলে খামারের বাকি ৩৫ টি গাভী ও বাছুর সুস্থ্যতার পথে। সুস্থ হলেও আগের মতো দুধ দিচ্ছে না গাভীগুলো বলছেন খামারি।

এদিকে ফরিদপুরে অন্যান্য খামারিদের গরুগুলোকে এই রোগ থেকে বাঁচাতে ভ্যাকসিনের ক্যাম্পেইন শুরু করেছে প্রাণীসম্পদ অফিস। সেই সাথে মশা-মাছি থেকে দূরে রেখে পরিষ্কার স্থানে পশু পালনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্থ খামারি শেখ মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৪ সালে ৬ টি গাভী নিয়ে খামার শুরু করলেও দশ বছরে এমন ভাবে ক্ষতির মুখে পরিনি। দেড় মাস আগে আমার খামারের গরুগুলো লাম্পিস্কিন রোগে আক্রান্ত হয়। প্রাণীসম্পদ অফিস থেকে ভ্যাকসিন প্রদান করে সুস্থ্য হতে না হতেই ফোঁড়া রোগের আমার সর্বনাশ হয়ে গেলে। লাম্পিস্কিনের ভ্যাকসিনের সাথে অফিস থেকে আমার খামারের সব গরুকে ফোঁড়া রোগের ভ্যাকসিনও প্রদান করা হয়। তারপরও একের পর এক গরু মারা গেল।

তিনি জানান, ২ রা সেপ্টেম্বর রাতে প্রথম একটি ফ্রিজিয়িান গাভী মারা যায়। এর পর ৭ দিনে আমার খামারে ৭ টি গাভী ও ১৩ টি বাছুর মারা যায়। বাছুরগুলোর বয়স ৬ থেকে এক বছরের মধ্যে। ৭ টি গাভীই প্রতিদিন দুধ দিতো। এর মধ্যে ৪টি গাভী অল্প কয়দিনের মধ্যে বাছুর জন্ম দিত। এতে আমার খামারের প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার গাভী ও বাছুর মারা যায়। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হল সুস্থ হওয়া গাভীগুলো আর আগের মত দুধ দিচ্ছে না। সে গাভী দিনে ২০ লিটার দুধ দিতো সেটি এখন ১০ লিটার দুধ দিচ্ছে। খামারে গরুগুলোর মৃত্যুর আগে দিনে ২৫০ লিটার থেকে ২৮০ লিটার দুধ পাওয়া যেত। এখন দিনে পাই ৩৫-৪০ লিটার। আমার দিনে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এই ক্ষতি আমি কিভাবে পোষাবো?

তিনি বলেন, ৫ তারিখে প্রাণীসম্পদ অফিস কর্মকর্তা ও ডাক্তার এসে আমার খামার পরিদর্শন করে তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। কিন্তু এক মাস আগেই আমি ফোঁড়া রোগের যে ভ্যাকসিন দিলাম তাতে কাজ হলো না কেন?

ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা শহিদুল ইসলামের খামার পরিদর্শন করেছি। তারা আমাদের মাধ্যমে নিয়মিতই ভ্যাকসিন প্রদান করে থাকে তাদের গরুগুলোকে। আমরাও তাদের নিয়মিত পরামর্শ ও পর্যবেক্ষণ করি। পদ্মা ক্যাটেল ফার্মের গরুগুলো পর পর দুবার দুটি আলাদা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে লাম্পিস্কিনে আক্রান্ত হলে ভ্যাকসিন ও পরিচর্যায় ঠিক হবার পরপরই ফোঁড়া রোগে আক্রান্ত হয় তার খামারের গরুগুলো। আমরা ভ্যাকসিন প্রদান করলেও কয়েকটি গরু মারা যায়। পর পর রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে গরুগুলোর ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াটা মৃত্যুর বড় একটা কারণ। আবার রোগের ফলে গরুর খাবারের রুচির নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার কম খায়। কিছু গরুর রুচি ফিরে আসার পর অতিরিক্ত খাবার খেয়ে গ্যাসের সমস্যা হয়েছে। তার খামারের বাকি গরুগুলোর চিকিৎসা চলছে। সেগুলো এখন অনেক ভাল আছে।

তিনি আরও বলেন, অন্য খামারিদেরও জন্য আমাদের ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন চালু করেছি। সেই সাথে মশা-মাছির কামড় থেকে দূরে ও পরিষ্কার স্থানে লালন পালন করতে পরামর্শ দিচ্ছি।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights