রফিক প্লাবন
দিনাজপুর।।
দিনাজপুরে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। আজ রোববার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো দুই জনে। এর আগে গত শুক্রবার (১১ আগস্ট) এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কোন ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কেবল মাত্র মতবিনিময় সভা ও শহরে মাইকিং করে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আবর্জনাসহ ডেঙ্গু মশার উৎপত্তিস্থল চিহ্নিতকরণ ও নির্মুলে নেওয়া হয়নি কোন কার্যকরি ব্যবস্থা।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, দুই দিনের ব্যবধানে এক শিক্ষার্থী ও এক কিশোরের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। দুইজনই ঢাকা ফেরত। আজ রোববার দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ১৮ বছরের কিশোর মাসুদ হাসান ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মাসুদ সদর দিনাজপুর সদর উপজেলার আটর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। ঢাকা ফেরত মাসুদ গত ৯ আগস্ট রাত ১০ টা ৫ মিনিটে এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
এরপর গতকাল রোববার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০ টা ২০ মিনিটে সে মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে গত ১১ আগস্ট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শিক্ষার্থী মো. রাকিব। ১৭ বছরের রাকিব চিরিরবন্দর উপজেলার দামাইল গ্রামের রহিদুল ইসলাম এর ছেলে। সে চিরিরবন্দর উপজেলার যশাই উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির ছাত্র ছিল।
রাকিবের মামা খোরশেদ আলম জানান, তার মা ঢাকার এক গার্মেন্টস ফেক্টরিতে কর্মরত রয়েছেন। মায়ের সাথে দেখা করার জন্য ক’দিন আগে রাকিব ঢাকায় গিয়েছিল। আর সেখান থেকে ফিরেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। দিনাজপুরে ডেঙ্গু পরিস্থিতির উদ্বেগজনক অবনতি ঘটায় সবাই গভীর চিন্তায় পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু প্রতিরোধে মতবিনিময় সভা ও মাইকিং করেই দায়িত্ব সারছেন। মশার উৎপত্তিস্থল চিহ্নিতকরণসহ মশা নির্মুলে নেওয়া হচ্ছে না কোন কার্যকরি ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য বিভাগ ও পৌর কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাস্তবমুখি কর্মসূচি না গ্রহন করলে দিনাজপুরে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির ভয়াবহতা সৃষ্টি হতে পারে বলে জনমনের আশঙ্কা।
সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় দিনাজপুরে ৪১ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে ১২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪৮ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ীতে ফিরেছে ৩০৫ জন।