।।ঠাকুরগাঁও(হরিপুর)প্রতিনিধি।।
সকালে পাখির কলকাকলি শুনতে কার না ভালো লাগে আর সেটা যদি হয় কোনো বাঁশ ঝাড়ে, এমনটাই লক্ষ্য করা যায় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার টেংরিয়া প্রধান পাড়া গ্রামের বান্ধা দিঘিতে। কালের বিবর্তনে আর মানুষের বসতির ফলে মানুষ যখন কেড়ে নিয়েছে পাখিদের আবাস ঠিক তক্ষুনি নিরুপায় হয়ে নিজের বাসা তৈরি বাঁশ ঝাড়ে করেছে চিরচেনা সেই তাঁতি পাখি বাবুই।
আগের দিনে রাস্তার ধারে কিংবা গ্রামের অলিতে গলিতে দেখা যেত বড় বড় মাথা উচু করা তালগাছ, ডাব গাছ সেখানে নিপুণভাবে বাসা তৈরি করতো ছোট বাবুই পাখি। পাখিদের কলতানে মুখরিত থাকতো গ্রাম গুলো। কিন্তু মানুষের বসতি আর আধুনিকতার ছোয়ায় তালগাছ নিধন করায় সেই চিরচেনা বাবুইর বাসা আজ তা গ্রামে কমই নজরে পড়ে। তাই নিজের যথাযথ বাসস্হান স্বপ্নের ছোট নীড় বাঁশ পাতা দিয়ে নিজের বাসাটি বুনছে ছোট পাখি বাবুই বান্ধাদিঘির পাড়ের বাঁশঝাড় গুলোতে। স্হানীয় বাসিন্দা আব্দুর রসিদ(৫০) জানান, আগে আমাদের গ্রামের ভিতর তালগাছ গুলোতে বাবুই পাখির কিচির মিচির আওয়াজ শোনা যেত কিন্তু তালগাছ কেটে ফেলার ফলে আজ আর সেই মনোমুগ্ধকর শব্দ কম শোনা যায়।
বিশিষ্ট সাংবাদিক জসিম উদ্দিন ইতি জানান, বন জংগল উজাড় করে কেটে ফেলার ফেলার ফলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে পাখিদের আবাসস্হল ধ্বংস হচ্ছে। যার ফলে নিরুপায় ছোট বাবুই পাখি এই ঘন বাঁশ ঝাড়ে তাদের স্বপ্নের বাসা তৈরি করছে। শেষ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে এই বান্ধা দিঘির ঘন বাঁশঝাড়। টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব জালাল সরকার জানান, আগে এই বান্ধা দিঘিতে বনজঙ্গল থাকার কারণে অনেক পশু পাখির বিচরণ ছিল বানর খেঁকশিয়াল, বিষধর সাপ, বিজু, ডাহুক পাখি। তবে বনজঙ্গল উজার করার ফলে এসব প্রানী আর চোখে পড়েনা। শীতের আগমনে অনেক অতিথি পাখির আগমন এ দিঘিতে ঘটে। তিনি বলেন পাখি শিকার, বনজঙ্গল উজার করার ফলে এই ছোট বাবুই পাখিও তার লোকালয়ের বাসা থেকে বঞ্চিত। যার ফলে তাদের বসবাস যোগ্য জীবন বেছে নিয়েছে এই গভীর বাঁশঝাড়ে। আমাদের বনজঙ্গল উজার, পশু পাখি শিকার না করা থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে।