আজ ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঘুর্ণিঝড় উপদ্রুতদের সহায়তা কমিয়েছে মিয়ানমার

  • In আন্তর্জাতিক
  • পোস্ট টাইমঃ ২৭ জুন ২০২৩ @ ০৯:৪২ পূর্বাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২৭ জুন ২০২৩@০৯:৪২ পূর্বাহ্ণ
ঘুর্ণিঝড় উপদ্রুতদের সহায়তা কমিয়েছে মিয়ানমার

।।ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক।।

মিয়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকায় সরকারি সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। এসব অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ তাদের জীবন পুনর্গঠনের সংগ্রাম করলেও সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ত্রাণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রমও সীমিত করা হয়েছে। মানবাধিকার গ্রুপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, সামরিক সরকারের এই পদক্ষেপ ‘চরম আবহাওয়া জনিত ঘটনা থেকে এটি মানুষের সৃষ্ট বিপর্যয়ে পরিণত হতে পারে’।

গত ১৪ মে মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোচা। এতে বিশাল এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়, শত শত মানুষের মৃত্যু হয়। বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর বহু পরিবার সামান্য ত্রাণের ওপর নির্ভর করে টিকে আছে। এরকম কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ঘূর্ণিঝড় কবলিত রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তে এলাকায় বসবাসকারী আয়ে খিয়াট ফিউ জানান, এই এলাকায় পর্যাপ্ত পানি কিংবা খাবার নেই, আবার যাও কিছু আছে তা বৃষ্টির মৌসুম চলায় সংগ্রহ করা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘পুরো সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি চলে। প্রতিদিন কষ্ট হয়। ছেলেমেয়েরা ছাদহীন স্কুলে পড়তে যায়।’

একই অঞ্চলের আরেক বাসিন্দা স্যান স্যান হ্লাতে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সব বাড়ি ভেঙে যায়। থাকার কোনো জায়গা নেই। বৃষ্টি হলে এখন বৃষ্টিতেই বসে থাকি। এমনকি ঘুমাতেও পারি না।’

জাতিসংঘের দাতব্য কার্যালয় জানিয়েছে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামান্য অংশই মেরামত হয়েছে। সামরিক জান্তা সরকার বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিদ্রোহরত সর্বদলীয় জাতীয় সরকারের হিসেব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা পাঁচশর কাছাকাছি। আরাকানের বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে দুই হাজারের বেশি গ্রাম এবং রাজ্যের দুই লাখ ৮০ হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, মোচার যাত্রাপথের শিকারে পরিণত হয়েছে মিয়ানমারের প্রায় ৫২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে প্রায় ৩২ লাখ অতি দুর্বল। রাখাইন রাজ্যটি মিয়ানমারের অতি দরিদ্র অঞ্চলের একটি। বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজ্যটির ৭৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে।

আয়ে খিয়াট ফিউ বলেন, আমরা চাই মিয়ানমার সরকার বাইরে থেকে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিক। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পর প্রথম সপ্তাহে তারা কিছু চাল, বিশুদ্ধ পানি ও তেল বাইরে থেকে পেয়েছিলেন। তবে গত ৮ জুন থেকে সেই সহায়তা পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। ওই সময় মিয়ানমারের জান্তা সরকার ওই এলাকায় পরিচালিত ত্রাণ সংস্থাগুলোর পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়। ফলে ওই এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মিয়ানমারের কর্মকর্তারা কখনোই ওই নিষিদ্ধের কারণ ব্যাখ্যা করেনি। তবে রাখাইন রাজ্য সরকারের মুখপাত্র স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তারা ত্রাণ বিতরণ সমন্বয় করতে চান, কারণ তার দাবি অনুযায়ী এগুলো ন্যায্যতার সঙ্গে বিতরণ করা হচ্ছিল না।

ওই মুখপাত্র বলেন, ‘এনজিওগুলো কেবল মুসলিম সম্প্রদায়কে সহায়তায় আগ্রহী।’ তিনি মূলত মুসলিম রোহিঙ্গা নাগরিকদের দিকে ইঙ্গিত করেন। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights