রফিক প্লাবন
দিনাজপুর।।
প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয়, তারা যে দেশের সম্পদ তা আবারও প্রমাণ করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন পবিত্র ঈদ উল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তার ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে দিনাজপুরের বাক প্রতিবন্ধী শিশুর আঁকা ছবি ব্যবহার করেছেন। যা দিনাজপুরবাসীকে গর্বিত করেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পাওয়া দিনাজপুর গোর এ শহীদ বড় ময়দানে অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মিনার ও জামাতের দৃশ্যটি একেছেন বাক প্রতিবন্ধী শিশু শিল্পী মোছাঃ আরিফা আকতার আঁখি। আঁখি শহরের বালুয়াডাঙ্গা নতুন পাড়া নিবাসী পুরাতন বই বিক্রেতা মোঃ আনারুল ইসলাম ও মোছাঃ শাহানাজ বেগম দম্পত্তির বড় মেয়ে। তার ছোট দুই ভাই রয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর এই শুভেচ্ছা কার্ড দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৪ জুন ২০২৩) সন্ধায় বঙ্গবন্ধু কন্যার ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডটি নিয়ে আাঁখির বাসভবনে যান ঈদগাহ মিনারের মূল পরিকল্পনাকারী জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি। এসময় আঁখি ও তার পরিবারের খোঁজ খবর নেন এবং তার হাতে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডটি এবং ঈদ উপহার তুলে দেন। এছাড়া দিনাজপুর বাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শিল্পী আঁখিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় সংসদে হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি। এসময় স্থানীয় আঁখির পিতা-মাতা এবং পৌর কাউন্সিলর আল মামুন রশিদসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আঁখির এই প্রতিভা দিনাজপুর বাসীকে গর্বিত করেছে। আঁখি প্রমান করেছেন বাক প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, সম্পদে পরিনত হয়েছে। ভবিষ্যতেও আঁখির মত অনেক প্রতিভা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। তিনি জানান, আয়তনের দিক দিয়ে এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ। এর আয়তন প্রায় ২২ একর। ঈদগাহ মিনারের মূল অংশ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট। মেহরাবের উচ্চতা ৫৫ ফুট। ৫২ গম্বুজ বিশিষ্ট এই ঈদগাহে রয়েছে দু’টি মিনার, প্রতিটির উচ্চতা ৬০ ফুট। মাঝের গেট দু’টি ৪৭ ফুট করে চওড়া। এতে খিলান আছে ৩২টি। এই ঈদগাহ মাঠে একসাথে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি ঈদ জামাতে অংশ নিতে পারবেন।
দিনাজপুর বাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শিল্পী আঁখিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি।
আঁখির পিতা আনারুল ইসলাম জানান, আখির এ সমস্যাটি বহু চিকিৎসককে দেখিয়েছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। চিকিৎসকরা বলেছেন- আখিকে এভাবেই সারাজীবন থাকতে হবে। তবে আমরা পিতা-মাতা চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি কখনো আল্লাহ রহমত দান করেন। কিন্তু আখি একজন মেধাবী ছাত্রী। সে দিনাজপুর রাজবাড়ীস্থ বধির ইনস্টিটিউটের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। আঁখি প্রথমে দিনাজপুর শিশু একাডেমিতে আর্ট শিখতো। বর্তমানে বালুবাড়ী আর্ট একাডেমিতে ভর্তি হয়ে আর্ট শিখছে। আমি একজন পুরাতন বই বিক্রেতা। দিন আনি দিন খাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার এই কন্যার মেধাকে শুভেচ্ছা কার্ডের মাধ্যমে দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে এ জন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা কার্ডে প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরের আঁকা ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই ছবি সংগ্রহ করা হয়। পরে এসব ছবির একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি পছন্দ মতো ছবি চূড়ান্ত করেন।