আজ ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

গত এক বছরে ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা

  • In জাতীয়, ব্যবসা বাণিজ্য
  • পোস্ট টাইমঃ ১৩ জুন ২০২৩ @ ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ১৩ জুন ২০২৩@১১:১৬ পূর্বাহ্ণ
গত এক বছরে ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা

।।বিশেষ প্রতিনিধি।।

পরিচালন ব্যয় মেটাতে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ৫৯হাজার ৭০০কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ৩০টি সংস্থা। এর মধ্যে ১৮৫কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২৩-এ এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ২৮ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর এই দায় (ঋণ) হিসাব করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলা হলেও রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো ধারদেনা করেই চলছে। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে প্রতি বছর দায় বাড়ছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আগের বছরের একই সময়ে এই ৩০সংস্থার ব্যাংক থেকে নেওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৪৮হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।

দেখা যায়, এক বছরের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংকঋণ বেড়েছে ১১হাজার কোটি টাকা।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এসব ঋণ নেওয়া হয়েছে সরকার মালিকানাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকেই। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই প্রতিনিধিকে জানান, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থাকে মূলত সরকারের নির্দেশেই ঋণ দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ ঋণ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পড়ে থাকায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ ছাড়া ওই অর্থ বিনিয়োগের বাইরে থেকে যাচ্ছে। এসব ঋণের বিপরীতে সময় সময় সরকারের পক্ষ থেকে কাগুজে বন্ড দেওয়া হলেও এর সুদের হার আমানত সংগ্রহের ব্যয়ের তুলনায় কম।

অর্থনৈতিক সমীক্ষার থেকে জানা যায, চলতি অর্থবছর শীর্ষ ঋণগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) একাই বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১৩হাজার ৮৭৮কোটি টাকা ধার করেছে। এরপর যথাক্রমে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ৯হাজার ৬৮কোটি টাকা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ৮হাজার ৫৬৯কোটি টাকা, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) ৭হাজার ৮০৭কোটি টাকা, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন করপোরেশন (বিপিডিবি) ৬হাজার ৮২৭ কোটি টাকা, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ৬হাজার ৯১কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিসি) ঋণ নিয়েছে ৪হাজার ৮৬০কোটি টাকা। বাকি সংস্থাগুলোর ব্যাংকঋণের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার কিছু কম বা বেশি হতে পারে। গত অর্থবছর বিএডিসির ৮হাজার ৯৭৫কোটি টাকা, বিসিআইসির ৭হাজার ৯৯৮কোটি, বিএসএফআইসির ৭হাজার ৪৭৮কোটি, বিবিসির ৫হাজার ২৫৫কোটি, বিপিসির ৫হাজার ৬৬কোটি, টিসিবির ১হাজার ৪৭কোটি এবং বিজেএমসির ১হাজার ৪৭কোটি টাকা ঋণ ছিল।

সংশ্লিষ্ট মহল বলছেন- স্বাধীনতার পর থেকেই অনেক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভর্তুকি ও ব্যাংক ঋণে চলছে। এদের মধ্যে বিপিডিবি, টিসিবির মতো কিছু প্রতিষ্ঠান সামাজিক ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে তাদের ভর্তুকি ও ঋণ সহায়তা দরকার। তবে বিজেএমসির মতো কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের বছরের পর বছর ঋণ সহায়তা দিলেও তা পরিশোধের সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। ব্যবস্থাপনাগত অদক্ষতা, ট্রেড ইউনিয়নের হস্তক্ষেপ, স্বজনপ্রীতি করে অধিক জনবল নিয়োগ, মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে ব্যর্থতাসহ নানা কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বছরে পর বছর ধরে লোকসানি রয়ে গেছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো কতদিন ধারদেনা আর ভর্তুকিতে চালানো হবে- সে বিষয়ে সরকারের একটি সময়াবদ্ধ কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। কারণ বর্তমান পরিস্থিতি এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে সরকারের অপচয়ের কোনো সুযোগ নেই।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights