আজ ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

লাল রঙের আখেই রঙিন স্বপ্ন দেখছেন তরুন কৃষি উদ্যোক্তা রাহাত রাজা

  • In বিশেষ সংবাদ
  • পোস্ট টাইমঃ ১৭ নভেম্বর ২০২৩ @ ০৬:৩০ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ১৭ নভেম্বর ২০২৩@০৬:৩০ অপরাহ্ণ
লাল রঙের আখেই রঙিন স্বপ্ন দেখছেন তরুন কৃষি  উদ্যোক্তা রাহাত রাজা
ছবি- বিডিহেডলাইন্স

হাবিবুর রহমান পলাশ
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।।

পেশায় একজন সাংবাদিক ও ফ্রিল্যান্সার তবে কৃষিকে ভালোবেসে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন কৃষি পেশার সাথে। নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনায় গড়ে তুলেছেন “বৃক্ষবাড়ি” নামের একটি কৃষি খামার।

২০১৯ সালে ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে রোপন করেছেন ফিলিপাইন লাল জাতের আখ। খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এর কদর রয়েছে বেশ।

৩৩ শতাংশ জমিতে বছর শেষে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বেচা বিক্রি হয় তার। স্বল্প বিনিয়োগ করে অধিক লাভের মুখ দেখছেন এই তরুন কৃষি উদ্যোক্তা। লাল রঙের আখের মতন রঙিন স্বপ্ন দেখছেন তিনি। দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় এ অঞ্চলে চাষীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই আখ।

আখের পাশাপাশি রোপন করেছেন লাল ও হলুদ জাতের ড্রাগন, মাল্টা, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুম ফলের গাছ।

এ সব ফল বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। তার কৃষি খামারে কর্মসংস্থানেরও হয়েছে এলাকার বেশ কিছু মানুষের।

শুরুতে বৃক্ষবাড়ি প্রতিষ্ঠা করতে বিক্রি করেন শখের আইফোন। তরুনদেরকে চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষি উদ্যোক্তা হবার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

ঘোনা এলাকার বাসিন্দা রিপন বলেন, আমি জীবনে প্রথাম দেখছি লাল জাতের আখ। এই আখ খেতে নরম ও প্রচুর মিষ্টি বাঁচ্চারা ও খেতে পারবে সহজে।

বাগানে কর্মরত শ্রমিক নয়ন বলেন, আমরা আগে বাহির কাজ করতে যেতাম। এখনকাজের জন্য বাহিরের কোথায় যাওয়া লাগেনা। এই আখের বাগানে আমি দেখাশোনার কাজ করি। আমি মাসে ৭-৮ হাজার টাকা বেতন পায়। আখ ছাড়াও বাগানে লাল ও হলুদ জাতের ড্রাগন, মাল্টা, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ রয়েছে। এ ছাড়া আখ কাটা, ঘাস পরিস্কার করা, পোকামাকড় দমনের জন্য স্প্রে করার জন্য আরও লোকের প্রয়োজন হয়।

সুমন হোসেন বলেন, রাহাত ভাই বাগান করার পর থেকে আমরা এখানে কাজ করি দৈনিক ৩৫০ টাকা দেয় এতে সংসার চলে।

বাগান দেখতে আশা চন্দন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষিকে স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তরিত করার জন্য রাহাত রাজার মতন তরুণদের এগিয়ে আসা উচিৎ।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে, আখের চারা নিতে আসা, ভাড়া শিমলা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জি এম শফিউল্লাহ বলেন, লাল জাতের আখ একটি লাভ জনক ফসল। এ আখ উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আমরা প্রাথমিকভাবে কয়েকজন কৃষকের মাঝে প্রদশর্নী হিসাবে ৩৬ শ আখের বীজ প্রদান করছি।

এ বিষয়ে কৃষি উদ্যোক্তা মো. রাহাত রাজা জানান, সাতক্ষীরা সিটি কলেজ থেকে কৃষি ডিপ্লোমা শেষ করার পর কৃষির প্রতি আমার অন্য রকম একটা ভালোবাসা জন্ম নেয় সেখান থেকে কৃষি ও কৃষকদের নিয়ে কি করা যায় তাই নিয়ে সব সময়ে চিন্তা করতাম। নিজের কেনা সখের আইফোন বিক্রি করে ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে বিভিন্ন ধরনের দেশি বিদেশি প্রভাতির গাছের চারা রোপন করি এবং বাজারে সারা বছর চাহিদা থাকে এমন কিছু গাছ খুজে রোপন করি এর ভেতরে লাল জাতের আখ একটি লাভ জনক ফসল এবং আখ রোপন করি। আমার ব্যাচের অনেকে কৃষি উপ-সহকারী হিসাবে চাকরি করছে আমি সরকারি চাকুরির পিছনে না ছুটে চেয়েছিলাম নিজেকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে। নিয়মিত চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার বাগান দৈনিক ৩-৪ জন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনির হোসেন জানান, আমরা জানি রাহাত রাজা একজন ফ্রিল্যান্সার তার নিজস্ব একটি ইউটিউব চ্যালেন রয়েছে। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা পেশার সাথেও জড়িয়ে আছে. তার ইউটিউব চ্যালেনের মাধ্যমে সারাদেশে ঘুরে ঘুরে কৃষিভিত্তিক ভিন্নধর্মী প্রতিবেদন তৈরী করেন তিনি। নিজের সঞ্চিত অর্থ ও অভিজ্ঞতা দিয়ে বিভিন্ন ফলমূলের বাগান করেছেন।

সাতক্ষীরা সিটি কলেজ থেকে কৃষিতে ডিপ্লোমা করা এই যুবক সরকারি চাকুরির পিছনে না ছুটে চেয়েছেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। সে সব সময়ে তরুনদেরকে চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষি উদ্যোক্তা হবার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষিকে স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তরিত করার জন্য তার মত যুকবদের কৃষিতে এগিয়ে আসা উচিৎ।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights