* পাঁচ সিটিতে কাউন্সিলর পদে প্রায় দুইশ নেতাকর্মী
* চূড়ান্ত তালিকা তৈরির পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা
।। বিডিহেডলাইন্স ডেস্ক ।।
আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির নেতারা। তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত আমলে না নিয়ে পুরোদমে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছেন দলের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে না-এমন অজুহাতে নির্বাচনি মাঠ ছাড়তে নারাজ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তারা ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। দলের এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তবে কেউ মেয়র কিংবা কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চাইলে প্রথমে তাকে দল থেকে বোঝানো হবে। বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে আছে। আন্দোলনের মাঝপথে নির্বাচনে প্রার্থী হলে দলের কী ক্ষতি হতে পারে, আগে কে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা সম্ভাব্য প্রার্থীদের বোঝানো হবে। এরপরও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে দলের একটি অংশ মনে করে, স্থানীয় রাজনীতি, পারিবারিক প্রভাবসহ নানা কারণে অনেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের মতো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আগে পুরো বিষয়টি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। যেসব নেতার জয়ের সম্ভাবনা আছে, তাদের ক্ষেত্রে হাইকমান্ডের কিছুটা নমনীয় হওয়া উচিত। তবে যারা ক্ষমতাসীন দলের ইন্ধনে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া উচিত হবে না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সে অনুযায়ী পাঁচ সিটি নির্বাচনে মেয়র কিংবা কাউন্সিলর কোথাও আমাদের দলের কোনো অংশগ্রহণ থাকবে না।
শুধু নির্বাচন বর্জন নয়, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা ভোট করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পাঁচ সিটিতে পদধারী যেসব নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এরপর ওইসব নেতার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রাক্কালে যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবে না, তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দলের নেতাকর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে।
সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপিসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সোমবার ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, এ সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে অন্তত ২৪ নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাকি চার সিটির মনোনয়ন জমা দেওয়া এখনো শুরু হয়নি। তবে এসব সিটিতে বিএনপির অসংখ্য নেতা কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে মাঠে আছেন। শুরু করেছেন প্রচারও। পাড়া-মহল্লায় শোভা পাচ্ছে তাদের পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার ও বিলবোর্ড। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভোটারদের কাছে দোয়া চাইছেন। অনেক প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চালাচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশন ৩ এপ্রিল ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে। ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।