আজ ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ও ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ এবং ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নিজ সন্তান কর্তৃক বিতাড়িত বৃদ্ধা মা শাকিলা বেগমের ঠাঁই হলো বৃদ্ধাশ্রমে

  • In বিশেষ সংবাদ
  • পোস্ট টাইমঃ ২৩ জুলাই ২০২৩ @ ০৮:৫৫ অপরাহ্ণ ও লাস্ট আপডেটঃ ২৩ জুলাই ২০২৩@০৮:৫৫ অপরাহ্ণ
নিজ সন্তান কর্তৃক বিতাড়িত বৃদ্ধা মা শাকিলা বেগমের ঠাঁই হলো বৃদ্ধাশ্রমে

রফিক প্লাবন
দিনাজপুর।।

দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর এবার বাসা থেকে বের করে দেওয়া সেই বৃদ্ধা মা শাকিলা বেগমের ঠাই হলো বৃদ্ধাশ্রমে। উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তাঁকে রংপুরের “সাফল্যের গল্প শোনাবো ফাউন্ডেশন’ বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে।

আজ রোববার (২৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহীন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল কুমার দাস, হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সায়েম মিয়া, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাসুদ রানা ও গণমাধ্যমকর্মী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওই বৃদ্ধা মাকে রংপুর সাফল্যের গল্প শোনাবো ফাউন্ডেশন বৃদ্ধাশ্রমের নিজস্ব গাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দাস জানান, গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে এই বৃদ্ধার বিষয়ে জানার পর আমি নিজেই মর্মাহত। নির্বাহী কর্মকর্তা সঙ্গে আলোচনা করেই ওই বৃদ্ধাকে গতকাল শনিবার রাতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তার শরীর অনেক দুর্বল।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু সায়েম মিয়া জানান, গত সাত দিন ধরে এক বৃদ্ধা গণমাধ্যম কর্মী রবিউল ইসলাম সুইট এর বারান্দায় আশ্রয় নেয়। পরে বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ ক্রমে গতকাল শনিবার রাতে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ঢাকার কোন বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো মৌখিক সিদ্ধান্ত নেয়। পরে আমারা জানতে পারি আমাদের রংপুর মেট্রো পুলিশে কর্মরত এসআই রেজাউল করিম এর একটি সমাজসেবা কর্তৃক নিবন্ধনকৃত বৃদ্ধাশ্রম আছে। আজ রোববার সকলের পরামর্শ ক্রমে তার সাফল্যের গল্প শোনাবো ফাউন্ডেশন বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় জানান, আনুমানিক ৮০ বছর বয়সী সেই বৃদ্ধার বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে গত শুক্রবার আমি জানতে পারি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরে আমি দিনাজপুর জেলা প্রশাসক অবগত করেছি। তাছাড়া বিষয়টি উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকেও আমি জানাই। তিনি বলেন, বৃদ্ধা দীর্ঘ সাত দিন থেকে একই জায়গায় খেয়ে না খেয়ে অবস্থান করছেন। তার শরীরের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। তাই তাকে শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান’র সাথে পরামর্শ করে বৃদ্ধার দেখ ভালের জন্য বা যতদিন সঠিক ঠিকানা না পাওয়া যাচ্ছে ততদিন সমাজসেবা কতৃক নিবন্ধনকৃত বৃদ্ধাশ্রমে ওই বৃদ্ধাকে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাকিলা বেগম বলেছিলেন, গত কয়েক দিন আগে আমার ছেলে ও ছেলের বউ একটি কাপড়ের ব্যাগসহ বাসে উঠিয়ে দিয়ে বলেছে- “আর যেন তাদের বাসায় না ফিরি। চোখ যেদিকে যায় সেদিকে তুমি চলে যাও”। বৃদ্ধা মহিলা ও বাসের লোক তার ছেলের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর চাইলে তার ছেলে মোবাইল নম্বরও দেয়নি। পরে বাসের ড্রাইভার তাকে হিলি সিপি মোড়ে নামিয়ে দেয়। শাকিলা বেগম জানান, তার মেয়ে নেই, এক ছেলে। নাম জামিল হোসেন। ছেলের চার মেয়ে আছে তার মধ্যে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছে।

নিউজ শেয়ারঃ

আরও সংবাদ

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

আলোচিত সংবাদ

নিউজ শেয়ারঃ
শিরোনামঃ
Verified by MonsterInsights